অতিকায় হাঙর মেগালোডন, সমুদ্রের সবচেয়ে ভয়ংকর শিকারী !!


উপকথা বা কিংবদন্তীর বেশিরভাগ ঘটনাই যে সত্য নয় তা আমরা সহজেই ধারণা করে নেই। কিন্তু অনেক সময়ই এসব কিংবদন্তী বাস্তুব কোনো কিছু বা ঘটনার উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়। যা বছরের পর বছর ধরে লোকমুখে চলতে চলতে কিছুটা পরিবর্তিত হয়ে যায়। অতিকায় হাঙর মেগালোডন নিয়ে থাকছে এবারের আয়োজন।




অতিকায় হাঙর মেগালোডন নিয়ে তথ্যচিত্র দেখুন বাংলায়-


অতিকায় হাঙর মেগালোডন, সমুদ্রের সবচেয়ে ভয়ংকর শিকারী !!


এমন একটি কিংবদন্তীর নাম মেগালোডন। সমুদ্রের সবচেয়ে বড় এই হাঙর নিয়ে রহস্য কম ঘনায়নি কিংবা আলোচনা বিতর্কও কম হয় নি। অনেকে বিশ্বাস করেন এখনো এই হাঙরের অস্তিত্ব আছে। ইতিহাস এবং বৈজ্ঞানিক পরীক্ষায়ও প্রমাণিত হয়েছে সত্যি একসময় সমুদ্রে রাজত্ব করতো এই হাঙরগুলো। তবে এখনো এ হাঙরের অস্তিত্ব আছে কি না তা নিয়ে রয়ে গেছে সন্দেহ।

২০ লাখ বছর আগে সমুদ্রে রাজত্ব করে বেড়িয়েছে মেগালোডোন নামে বিশালাকৃতির এই হাঙরগুলো। বিভিন্ন গবেষণা, খুঁজে পাওয়া ফসিল এবং বিজ্ঞানীদের মতামত থেকে জানা যায় এই হাঙর ১৮ মিটার বা ৬০ ফুটের মতো লম্বা হতো। আবার অনেকের মত এরা একশ ফুটেরও বেশি লম্বা হতো।

অতিকায় হাঙর মেগালোডন, সমুদ্রের সবচেয়ে ভয়ংকর শিকারী
খুঁজে পাওয়া ফসিল এবং বিজ্ঞানীদের মতামত থেকে জানা যায় এই হাঙর ১৮ মিটার বা ৬০ ফুটের মতো লম্বা হতো। আবার অনেকের মত এরা একশ ফুটেরও বেশি লম্বা হতো। Photo: Wikimedia Commons/Public Domain

এই হাঙরের চোয়াল ছিলো ৬ ফুটেরও বেশি প্রশস্ত আর ৭ ইঞ্চি লম্বা ২৭০টির মতো ক্ষুরধার দাত একে ভয়ংকর শিকারী প্রাণীতে পরিণত করেছিলো।

বর্তমানের গ্রেট হোয়াইট শার্ক ১৫ থেকে ২০ ফুটের মতো লম্বা হয়। এর সাথে তুলনা করে দেখা যায় নিঃসন্দেহে এই হাঙর সমুদ্রের যে কোনো প্রাণীর জন্য আতংকের কারণ ছিলো।

অনেক গবেষক জোর দিয়ে বলে আসছেন এই প্রাণীটি অনেক আগেই পৃথিবীর বুক থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। কিন্তু গত কয়েকশ বছরে সমুদ্রের বুকে অস্বাভাবিক বড় আকৃতির কিছু হাঙর দেখতে পাওয়ার ঘটনা এই দাবিকে কিছুটা দুর্বল করে দেয়।


মেক্সিকো, পলিনেশিয়া এবং ইন্দোনেশিয়ার অনেক জেলেই দাবি করেছেন তারা ৫০-৬০ ফুটেরও বেশি বড় হাঙর দেখেছেন। অনেকে আক্রমণের শিকার হয়েছেন বলেও দাবি রয়েছে। তবে এদের বেশিরভাগই অতিরঞ্জিত বলে মনে করা হয়।

কিন্তু বিগত বছরগুলোতে খুঁজে পাওয়া তিমি মাছের মৃতদেহে কিছু বিশালাকৃতির কামড়ের চিহ্ন কিন্তু ঠিকই চিন্তায় ফেলে দেয় বিজ্ঞানীদের। ১৯৭০ সালে এক তিমির মৃতদেহে পাওয়া কামড়ের চিহ্ন পরীক্ষা করে গবেষকরা নিশ্চিত হন, আক্রমণকারী ছিলো প্রায় ৩০ ফুট লম্বা কোনো প্রাণী।

অতিকায় হাঙর মেগালোডন, সমুদ্রের সবচেয়ে ভয়ংকর শিকারী
এই হাঙরের চোয়াল ছিলো ৬ ফুটেরও বেশি প্রশস্ত আর ৭ ইঞ্চি লম্বা ২৭০টির মতো ক্ষুরধার দাত একে ভয়ংকর শিকারী প্রাণীতে পরিণত করেছিলো। Photo: Wikimedia Commons. Author: Karen Carr

এই আকৃতি কিংবদন্তীর মেগালোডনের সমান না হলেও, এটা নিশ্চিত হওয়া যায় হোয়াইট শার্কের চেয়েও বড় কোনো শিকারী সমুদ্রে বাস করছে। এর সপক্ষে গবেষকরা বলেন, সেলিক্যান্থ নামে একটি সামুদ্রিক প্রাণী যা সাড়ে ছয় কোটি বছর আগে পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিলো বলে মনে করা হতো, কিন্তু ১৯৩৮ এবং ১৯৫২ সালে ওই প্রাণীটি আবার দেখতে পাওয়া যায়। সে কারণে গবেষকদের বিশ্বাস সেলিক্যান্থের মতো মেগালোডনও হয়তো বিলুপ্ত হতে হতে কোনোভাবে টিকে গেছে। তবে সে সংখ্যা খুব বেশি নয়।

তবে এর বিপক্ষে যুক্তি হচ্ছে, মেগালোডোনের অস্তিত্ব যদি থাকতো তবে তার চিহ্ন অবশ্যই খুঁজে পাওয়া যেত। যেমন বিশালাকৃতির ওই হাঙরের মরদেহ দেখতে পাওয়া বা মৃত প্রাণীর শরীরে মেগালোডোনের দাঁতের অস্তিত্ব পাওয়ার মতো কোনো খবর সম্প্রতি পাওয়া যায় না। জলবায়ু পরিবর্তন এবং খাবার সংকটের কারণে অনেক আগেই নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে এই দানবীয় হাঙরগুলো।

গভীর সমুদ্রের অনেক কিছুই আমাদের অজানা রয়ে গেছে, তবে, এই বিশাল হাঙরটি এখনো রাজত্ব করছে কি না তা নিয়ে যেমন রয়েছে নিশ্চিত উত্তর, আবার অনেকেই বিশ্বাস করেন হয়তো এখনো টিকে আছে এই হাঙরটি।

বাংলায় দুর্দান্ত সব ভিডিও দেখতে আমাদের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন- Funny Frog Creatives



Image Credit:

1. মেগালোডন Photo: Wikimedia Commons. Author: Karen Carr

0/Post a Comment/Comments

Previous Post Next Post