আমাদের পৃথিবী এখনো এমন কিছু রহস্য ধরে রেখেছে যার ব্যাখ্যা দিতে হার মানছে বিজ্ঞান। আধুনিক বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি অনেক কিছুর ব্যাখ্যাই দিতে পেরেছে কিন্তু ইতিহাসের অনেক ঘটনার নূন্যতম ব্যাখ্যা দিতে পারেনি বিজ্ঞান। এমন অদ্ভুত ৫টি অমীমাংমিত রহস্য নিয়ে থাকছে এই প্রতিবেদন।
বিশ্বের অদ্ভুত ৫টি অমীমাংমিত রহস্য নিয়ে তথ্যচিত্র দেখুন বাংলায়-
অদ্ভুত ৫টি অমীমাংমিত রহস্য যার ব্যাখ্যা নেই বিজ্ঞানীদের কাছে !!
সাগরের মানুষ
সমুদ্রে বসবাসকারী একদল মানুষ হঠাৎই ডাঙ্গায় চলে আসে এবং তাদের আক্রমণে পুরো সভ্যতাই ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়। Photo: Wikimedia Commons/Public Domain |
ইস্টার দ্বীপের মূর্তি
রাপা নুই নামের আদিবাসীরা ৮৮৭টি পাথরের তৈরি বিশাল বিশাল মূর্তি অন্যকোন জায়গা থেকে ইস্টার দ্বীপে নিয়ে এসেছিলো। Photo: Public Domain |
ইস্টার দ্বীপের অতিকায় সব মূর্তিগুলোর কথা অনেকেই হয়তো জানেন। একজন ডাচ অনুসন্ধানকারী ১৭২২ সালে ইস্টার দ্বীপের এই মূর্তিগুলো আবিষ্কার করেন। দ্বীপের রাপা নুই নামের আদিবাসীরা ৮৮৭টি পাথরের তৈরি বিশাল বিশাল মূর্তি অন্যকোন জায়গা থেকে ইস্টার দ্বীপে নিয়ে আসে! এতগুলো মূর্তির কথা শুনে নিশ্চয়ই অবাক হচ্ছেন? ইস্টার দ্বীপে এই মূর্তিগুলো আনার বিষয়ে বেশকিছু যুক্তি বা তত্ত্ব আছে। যদিও সব তত্ত্বগুলোকেই বিজ্ঞানীরা উড়িয়ে দিয়েছেন কিন্তু গবেষকদের কাছ থেকে গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা এখনো পাওয়া যায়নি। এরপর অনেক দিন ধরেই পরীক্ষামূলকভাবে এরকম অতিকায় মুর্তি দ্বীপান্তরিত করার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু সেসব পথিমধ্যেই ভেঙ্গে গেছে নয়তো কোন না কোন ভাবে নষ্ট হয়ে গেছে। উল্লেখ্য যে, রাপা নুই আদিবাসীদের পূর্ব পুরুষ ছিলো পলিনেশিয়ান এবং কিভাবে তারা এই মূর্তিগুলো বানিয়েছিলো বা এই দ্বীপে নিয়ে এসেছিলো তা আজো রহস্য হিসাবেই রয়ে গেছে।
ফাইস্টসের চাকতি
ফাইস্টসের চাকতি। ব্রোঞ্জের তৈরি এই ডিস্কের উপর সর্পিল ভাবে ঘড়ির কাঁটার অনুকরণে অনেকগুলো ক্ষুদে ক্ষুদে চিহ্ন আছে। Photo: Wikimedia Commons. Author: C messier |
পৃথিবী বিখ্যাত প্রত্নতাত্ত্বিক রহস্যময় বস্তুগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে ফাইস্টোস ডিস্ক। ১৯০৮ সালে ক্রিট দ্বীপে এই ফাইস্টোস ডিস্ক পাওয়া যায়। ব্রোঞ্জের তৈরি এই ডিস্কের উপর সর্পিল ভাবে ঘড়ির কাঁটার অনুকরণে অনেকগুলো ক্ষুদে ক্ষুদে চিহ্ন আছে। এই ছোটো ডিস্কের উপরের ক্ষুদে চিহ্নগুলো একেকটি প্রশ্ন হয়ে দীর্ঘদিন থেকেই ঝুলে আছে। কবে এগুলো বানানো হয়েছিলো বা কি কাজে ব্যবহার করা হতো অথবা ক্ষুদে চিহ্নগুলো আসলে কি নির্দেশ করছে তা জানা যায়নি আজো। অনেকেই এই ডিস্ককে নিছক ধাপ্পাবাজি বলে চালিয়ে দিলেও বহু মানুষ একে আসল মনে করেন এবং বিশ্বাস করেন এটি অবশ্যই কোনো না কোনো কারণে তৈরি হয়েছিলো।
দিল্লির লোহার স্তম্ভ
দিল্লির লোহার স্তম্ভ। আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, এই লোহার স্তম্ভে একদমই মরিচা ধরেনি। Photo: Public Domain |
দিল্লির কুতুব কমপ্লেক্সের সাত মিটার লম্বা লোহার স্তম্ভ নিয়ে এখনো অনেক বিতর্ক রয়েছে। এই লোহার স্তম্ভটি উদয়গিড়ি থেকে দিল্লিতে নিয়ে এসেছিলেন একজন অধিরাজ ৪০২ অব্দে। কিন্তু এই ইতিহাস নিয়ে বিতর্ক আছে। অনেকের মতে, এই স্তম্ভটি কবে আনা হয়েছিলো তা জানা যায়নি। তবে, সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, এই লোহার স্তম্ভে একদমই মরিচা ধরেনি। এর কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে বিজ্ঞানীরা দুভাগে বিভক্ত হয়ে গেছেন। একদল বলছেন, দিল্লির আবহাওয়ার কারণে লোহায় মরচে ধরে না, আবার অন্যরা বলেছেন এই স্তম্ভটি নির্মাণ করার সময় এটাতে সালফার আর ম্যাগনেসিয়াম ব্যবহার করা হয় নি তাই এটাতে মরিচা ধরে না। কিন্তু আরেকটা রহস্য কিন্তু থেকেই যাচ্ছে, সেটা হচ্ছে, কে বা কারা কিভাবে এতো বড় স্তম্ভটি তৈরি করেছিলো আর এটা বানানোর জন্যে ধাতু গুলোকে গলানো হয়েছিলো কিভাবে।
তুরিনের কাফন
তুরিনের কাফনের উপর একজন মানুষের ঝাপসা অবয়ব রয়েছে যার মুখমন্ডল অনেকটা নাজারথের যীশুর মতো। Photo: Wikimedia Commons/Public Domain |
প্রাচীন স্থাপনা থেকে এবার চোখ ফেরানো যাক তুরিনের কাফনের উপর। আগে যারা এই বিষয়ে শুনেননি, তারা অবশ্যই অবাক হবেন এবং দ্বিতীয়বার ভাববেন এটা কিভাবে সম্ভব? তুরিনের কাফন হচ্ছে এক প্রস্থ লিনেনের কাপড়, যার আকার ১৪ ফুট বাই ৩ ফুট। আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, এই কাপড়ের উপর একজন মানুষের ঝাপসা অবয়ব রয়েছে যার মুখমন্ডল অনেকটা নাজারথের যীশুর মতো। শতকের পর শতক ধরে অনেক কঠোর পরীক্ষার মুখোমুখি হয়েছে এই কাপড়টি। ১৯৮৮ সালে এক পরীক্ষার পর জানানো হয়, এই কাপড় তৈরি হয়েছিলো মধ্যযুগে। যে কারণে অনেকেই বিশ্বাস করেন, এটাই সেই কাপড় যা দিয়ে যীশু খ্রিস্টকে সমাহিত করা হয়েছিলো। কিন্তু কাপড়ের ওপর মানুষের অবয়ব কিভাবে আসলো এই প্রশ্নের গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা দিতে পারেননি কেউ। অনেকের মতে এই অবয়ব রঙ দিয়ে তৈরি করা হয়নি বা কোনো মানুষও এই অবয়বটি আঁকেনি। অতিবেগুনী রশ্মি ব্যবহার করে এই অবয়ব আঁকা হয়েছিলো বলে ধারণা অনেকের। কিন্তু এ তত্বও ধোপে টেকে না। যে কারণে, তুরিনের কাফন এখনো জন্ম দিয়ে চলেছে নানা প্রশ্নের।
বাংলায় দুর্দান্ত সব ভিডিও দেখতে আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন- Funny Frog Creatives
Image Credit
ফাইস্টসের চাকতি। Photo: Wikimedia Commons. Author: C messier
Post a Comment