ইসরায়েলের একটি গুহা থেকে আবিষ্কৃত ডেড সি স্ক্রল মূল্যবান স্বর্ণ এবং সম্পদের
দিকনির্দেশক ছিলো বলে বিশ্বাস অনেকের। আবার, নামিবিয়ার মরূভূমিতে খুঁজে পাওয়া পর্তুগীজ জাহাজ বম জেসাসের ধ্বংসাবশেষ গবেষকদের ফেলে দিয়েছিলো দারুন
অনিশ্চয়তার মধ্যে। মরুভূমিতে খুঁজে পাওয়া এমন ৫টি রহস্যময় আবিষ্কার নিয়ে থাকছে এই প্রতিবেদন।
মরুভূমিতে খুঁজে পাওয়া সবচেয়ে রহস্যময় ৫টি আবিষ্কার নিয়ে
তথ্যচিত্র দেখুন বাংলায়-
মরুভূমিতে খুঁজে পাওয়া সবচেয়ে রহস্যময় ৫টি আবিষ্কার যার ব্যাখ্যা এখনো খুঁজে চলেছেন বিজ্ঞানীরা !!
ডেড সি স্ক্রল
Photo: Public Domain |
১৯৪৬ থেকে ১৯৫৬, এই দশ বছরের মধ্যে ইসরায়েলের একটি গুহা থেকে ৮৫১টি পুরোনো দলিল আবিষ্কার করা হয়। এই
দলিলগুলো পরিচিতি পায় ডেড সি স্ক্রল নামে। রহস্যময় ভাষায় লেখা এই দলিলগুলোর মধ্যে
একটি ছিলো আরো রহস্যময়। তামার পাতের ওপর লেখা ওই দলিলটি গুপ্তধনের দিকনির্দেশক ছিলো
বলে বিশ্বাস করেন অনেকেই। ধারণা করা, হয় ওই দলিলটিতে ৬০টি জায়গার কথা বলা হয়েছে যেখানে সোনা লুকিয়ে রাখা হয়েছিলো। রোমানদের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য ইহুদিরা বহুমূল্য স্বর্ণ লুকিয়ে ফেলেছিলো। আর তা কোথায় রাখা
হয়েছে তার দিক নির্দেশনা ছিলো এই দলিলটিতে। কিন্তু দলিলটির ভাষা এতটাই
দুর্বোধ্য যে সত্যিকারে কোথায় সোনাগুলো লুকিয়ে রাখা হয়েছিলো তা সম্পর্কে সামান্যতম
সূত্রও বের করা যায়নি। তবে, ওই দলিলটি আবিষ্কারের পর থেকেই মানুষ লুকোনো স্বর্ণ উদ্ধারে খোঁজাখুঁজিও কম করেনি। অনেক ইতিহাসবিদ বিশ্বাস করেন, কয়েক
শতক আগেই ওই গুপ্তধন কারো হস্তগত হয়ে গেছে।
সিরিয়ার স্টোনহেঞ্জ
Photo Credit: Wikimedia Commons. Credit: Franco Pecchio from Milano, Italy |
২০০৯ সালে সিরিয়ারে মরুভূমিতে একটি হারিয়ে যাওয়া প্রাচীন
সভ্যতার ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কার করা হয়।
সিরিয়ার স্টোনহেঞ্জ নামে পরিচিত হয়ে ওঠা এই আবিষ্কারটি ৬ থেকে ১০ হাজার বছরের
পুরোনো বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের কারণে, কোনো বিজ্ঞানীই
ভালোভাবে পরীক্ষা করতে পারেননি এই ঐতিহাসিক স্থানটি। যে কারণে,, পিরমিডের থেকেও পুরোনো এই
স্থাপনা সম্পর্কে এখনো বিস্তারিত জানা সম্ভব হয় নি। নিওলিথিক যুগে মানুষ যখন কেবল শস্য ফলাতে শুরু করেছে, এই স্থাপনাগুলোও তার সমসাময়িক বলে বিশ্বাস বিজ্ঞানীদের।
তিউনিশিয়ার রহস্যময় জলাশয়
Photo Credit: tunisie-voyage-loisir.com |
২০১৪ সালের আগস্টে তিউনিশিয়ার মরুভূমির শুষ্ক প্রান্তরে হঠাৎই একটি জলাশয়ের সৃষ্টি হয় যা স্থানীয়দের মাঝে
ব্যাপক কৌতুহলের জন্ম দেয়। কিন্তু কেউ বুঝতে পারছিলো না জলাশয়টি কিভাবে তৈরি হলো।
স্থানীয়দের মাঝে এটি গাফসা বিচ নামে পরিচিত হয়ে উঠে এবং অনেকে গোসলও করতে শুরু
করেন। কিন্তু হঠাৎ করে তৈরি হওয়া
জলাশয়ের পানি তেজস্ক্রিয় হতে পারে এমন আশঙ্কা করে ওই জলাশয়ে গোসল করা নিষিদ্ধ করা হয়।
বম জেসাস
Photo Credit: foxnews.com |
২০০৮ সালে আফ্রিকার দেশ নামিবিয়ার মরুভূমিতে পর্তুগীজ জাহাজ
বম জেসাসের ধ্বংসাবশেষের সন্ধান পাওয়া যায়। ১৫৩৩ সালে প্রচুর স্বর্ণমুদ্রা এবং মূল্যবান
সামগ্রী নিয়ে এই জাহাজটি ভারতের উদ্দেশে যাত্রা করেছিলো। কিন্তু জাহাজটি ভারতে পৌঁছায়নি। এমনকি এই জাহাজটির কি
হয়েছিলো তাও কেও জানতে পারেনি তখন। আফ্রিকা কোনো কালেই পর্তুগীজ উপনিবেশ ছিলো না।
আর পর্তুগাল থেকে ভারতে যাওয়ার রুটটিও ছিলো আফ্রিকা থেকে অনেক দূরে। কিন্তু তারপরও
এই জাহাজটি কি করে নামিবিয়ায় পৌঁছেছিলো তা আজো রহস্য হয়ে রয়েছে। জাহাজটি থেকে ২ হাজার স্বর্ণমুদ্রা উদ্ধার
করা হয় কিন্তু জাহাজটির আরোহীদের কারো দেহাবশেষ পাওয়া যায়নি।
সুদানের সমাধী
Photo credit: Polish Center of Mediterranean Archaeology Archives |
সুদানের মরুভূমিতে ১৯৯৩ সালে ৯০০ বছরের পুরোনো একটি
সমাধীক্ষেত্র আবিষ্কার করা হয়। আর একটি সমাধীর ভেতর পাওয়া যায় প্রাকৃতিকভাবে মমি
হয়ে যাওয়া ৭টি মরদেহ। এরা সবাই ছিলো তৎকালীন মাকুরিয়া সাম্রাজ্যের
মানুষ। এই আবিষ্কারের সবচেয়ে আশ্চর্যের
বিষয় ছিলো সমাধীর ভেতরের দেয়াল জুড়ে রহস্যময় সব সংকেত এবং লেখা। মনে করা হয় অশুভ শক্তিকে দূরে রাখার জন্য এই মন্ত্রগুলো লেখা হয়ে থাকতে
পারে। কিন্তু এসব লেখার অর্থ বের করতে
না পারায় ঠিক কি করাণে এমন সমাধীক্ষেত্র তৈরি করা হয়েছিলো তা আজও জানা সম্ভব হয়নি।
Photo credits:
1. Wikimedia Commons. Credit: Franco Pecchio from Milano, Italy
3. foxnews.com
Post a Comment