লিভিং রুমের নানা আয়োজন



সময়ের সাথে সাথে ড্রইং রুমের একচাটিয়া প্রভাবকে পেছনে ফেলে গড়ে উঠেছে নতুন ধারণা। বর্তমানে অতিথি আপ্যায়নের পাশাপাশি আয়েশ করে বসে পরিবারের লোকদের সাথে গল্প করা বা টিভি দেখা বা গান শুনতে শুনতে বই পড়ার জন্য লিভিং রুমের বিকল্প নেই। বেতর চেয়ার, কুশন, ছোট মোড়া, এরকম হালকা জিনিস দিয়ে ঘরকে সাজাতে পারেন। যাতে ঘরটিকে ঠিক ড্রইং রুমের মতো মনে না হয়। আসবাবের পাশাপাশি এই ঘরে রাখতে পারেন লাইটিং-এর ব্যবস্থা সেই সাথে , কার্পেট,এ ন্টিক শোপিস তো আছেই। এছা্‌ড়া রুমের এক পাশে রাখতে পারেন দাবা বা ক্যারাম খেলার মতো আয়োজনও। 




লিভিং রুমের নানা আয়োজন

এন্টিক আসবাব


প্রথমেই বলে রাখা ভাল, লিভিং রুম কিন্তু ড্রইং রুম নয়। এখানে ভারী কোন আসবাব না রাখাই ভালো। হালকা ,ব্যক্তিত্বে সাথে মানানসই, এন্টিক আসবাব দিয়ে লিভিং রুম সাজাতে পারেন। সেক্ষেত্রে মাঝে মাঝে এসব আসবাব পরিবর্তন করতে পারেন। এতে ঘরের একঘয়েমি যেমন দূর হবে তেমনি ঘরকে আরো বেশি আরামদায়ক মনে হবে।

আসবাব সাজান মানানসই ভাবে


অনেকের লিভিং রুমে দেখা যায় এক আসবাবের সাথে অন্যটার কোন মিল নেই। বসার জায়গা করেছে ফ্লোরে আর এর ঠিক পাশেই উচু আলমারিতে রাখা হয়েছে শো পিস, বুকসেলফে রাখা হয়েছে বইপত্র। তাহলে কিন্তু ঘরের সৌন্দর্যই নষ্ট হবার উপক্রম হবে। বরং লিভিং রুমকে এমনভাবে সাজাতে হবে যাতে সহজে সব কিছু পাওয়া যায়। এতে রিলেক্স করা আরো সহজ হবে। আজকাল লিভিং রুমের বসার আয়োজনটা অনেকেই ফ্লোরে করে থাকেন। গতানুগতি সোফা বা চেয়ার টেবিল দিয়ে ঘরের স্পেস ভর্তি না করে বরং ছোট বড় কুশন, কার্পেট বা ম্যাট দিয়ে সাজাতে পারেন।

সমসাময়িক আসবাব


শুধু এন্টিক নয় অনেক সময় সমসাময়িক আকর্ষণীয় সব আসবাব দিয়েও ঘরকে সাজিয়ে তুলতে পারেন।বসার জন্য অনেকেই এখন আর চেয়ার বা সোফার উপর নির্ভরশীল নয়। সুন্দর একটি ল্যাম্প রাখতে পারেন রুমের কোণার দিকের কোন টেবিলে- যা ঘরে আসা অথিতিকে উষ্ণ অর্থ্যভ্যনা দিবে।



ফেং সুই লিভিং রুম 


যারা একটু বাস্তুশাস্ত্রে বিশ্বাস করেন তারা লিভিং রুমকে সাজাতে পারেন ফেং সুই মেনে। বাস্তুশাস্ত্র মতে ঘরের আলো বাতাস ও আসবাবকে এমনভাবে সাজাতে হবে যাতে সব কিছুতে একটা ছন্দ খুজে পাওয়া যায়।আর এতে শুধু যে ঘরের সোন্দর্য্য বাড়ে তা নয় বাসিন্দাদেরও জীবন মান ভালো হয়।
  

রুমের এক্সোসরিজ


রুমের এক্সোসরিজ সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। লিভিং রুমে এমন সব এক্সোসরিজ ব্যবহার করতে হবে যাতে পরিবারের সদস্য বা বন্ধুদের সাথে আরাম আয়েশে বসে কথা বা আড্ডা দেয়া যায়। সেই ফাঁকে হালকা কিছু খাওয়ার ব্যবস্থা রাখা যায়।
  

দেয়াল ও পর্দার রং


বর্তমানে প্রতিটি ঘরের দেয়ালে ভিন্ন রং করার একটা প্রবণতা প্রায় সবার মধ্যেই দেখা যায়। লিভিং রুমের দেয়াল, সিলিং ,দরজা, জানালা যেন এক রকম বা কাছাকাছি ধরণের হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখুন। এর পাশাপাশি আসবাবপত্র, এক্সোসরিজ এসবের রংয়ের প্রতিও খেয়াল রাখতে হবে। যাদের হালকা নীল রং পছন্দ তারা এই রংয়ের বিভিন্ন সেড ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়া নীলের সাথে মানানসই অন্য রংও ব্যবহার করতে পারেন। দেয়ালের পাশাপাশি ঘরের পর্দার রংও বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এমন রং ব্যবহার করুন যাতে ঘরে সহজে আলো বাতাস চলাচল করতে পারে সেই সাথে আকর্ষনীয় হয় এবং ঘরের অন্যন্য আসবাবের সাথে মানান সই হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। বর্তমানে বাজারে ব্লক, বাটিক, এপ্লিকসহ বিভিন্ন নকশাদার পর্দা পাওয়া যায়। আপনার রুচি ও ব্যক্তিত্বের সাথে মিলিয়ে পর্দা কিনতে পারেন।



টিভি বা মিউজিক প্লেয়ার রাখুন


বুক সেফলের পাশাপাশি ঘরের এক কোনে রাখতে পারেন টিভি বা মিউজিক প্লেয়ার।সনাতন, কাঠের বা কাঁচের তৈরি র‌্যাকে টিভি ,বা ইলেকট্রনিক গেজেট রেখে দিন। আর এর ঠিক পাশেই রাখুন আয়েশ করে বসার ব্যবস্থা। সারা দিনের কাজ শেষে সোফা বা ডিভানে গা এলিয়ে দিয়ে দেখতে পারেন টিভি। দিতে পারেন আড্ডা।এতে এক দিকে আপনার বেডরুমের উপর চাপ যেমন কমবে তেমনি আয়েশ করে টিভিও দেখা হবে।


চিত্রকর্ম ও হাউজপ্ল্যান্ট


দেয়ালে ঝুলিয়ে দিতে পারেন যে কোনো চিত্রকর্ম। তা আপনার বা আপনার পরিবারের সদস্যদেরই হতে হবে এমন নয় ,পশুপাখি, প্রকৃতি কতাকিছুই তো হতে পারে। এছাড়া ঝুলাতে পারেন মজার মজার মুখোশ, গাছ বা শোপিস। লিভিং রুমে রাখতে পারেন প্রিয় গাছ।সুন্দর ও পরিস্কার টবে গাছ রাখলে মনটাও সতেজ থাকে আর দেখতেও ভালো লাগে।
  

লিভিং রুমকে সাজানোর সময় একটা বিষয়ে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে আর তা হলো রুমের প্রাকৃতিক আলোর উৎস যেন ঠিক থাকে। পরিবারের সদস্যদের লাইফ স্ট্যাইল, তাদের চিন্তা চেতনা, সৃজনশীলতা, এসব বিষয়ের প্রতিও খেয়াল রাখা জরুরী। সবচেয়ে বড় কথা আপনার ব্যক্তিত্ব ও রুচের সাথে মানানসই দৃষ্টিনন্দন করে সাজিয়ে তুলুন লিভিং রুম। তবে সেভাবেই সাজান না কে কেন অবশ্যই প্রতিদিন ঘর পরিস্কার করুন কেননা ধুলো ময়লা জমা ঘরে আর যাই হোক নান্দনিকতা ফুটে উঠে না।
  


তাহমিনা তাসির


0/Post a Comment/Comments

Previous Post Next Post