অফিসে সবার প্রিয়পাত্র হয়ে উঠতে পারেন যেভাবে



প্রতিটি অফিসেই কিছু নিয়ম কানুন থাকে, থাকে অফিস ডেকোরাম। আস্তে কথা বলা, অন্যকে বিরক্ত বা বিব্রত না করা ছাড়াও আছে আরো এমন কিছু বিষয় যেগুলো হয়তো এড়িয়ে যাচ্ছে আপনার চোখ। যে কারণে দিনে দিনে আপনি হয়ে উঠছেন সবার 'অপ্রিয়'। অফিস ম্যানার প্রতিটি কর্মীকে অবশ্যই মানতে হবে, তবেই না সুন্দর থাকবে কর্মপরিবেশ আর আপনি হয়ে উঠবেন সবার প্রিয়পাত্র। চলুন তবে জেনে নেই কিছু টিপস।


অফিসে সবার প্রিয়পাত্র হয়ে উঠতে পারেন যেভাবে


আমাদের দেশের প্রায় প্রতিটি অফিসে নারী-পুরুষ এক সাথে কাজ করে। পদমর্যাদার দিক থেকে কখনো নারী সহকর্মীরা উচ্চপদে আসীন থাকেন। তখন পুরুষ কর্মীদের মধ্যে হীনস্মন্যতা দেখা দিতে পারে। নারী-পুরুষ যে যে পদেই থাকুক না কেন, প্রত্যেককে তাদের সঠিক মর্যাদা দিতে হবে। অফিসে কাউকে ছোট করে, আঘাত দিয়ে কথা না বলাই ভালো। অনেকের মধ্যে সহকর্মীদের নিয়ে বাজে মন্তব্য করা বা বাদানুবাদের বিশেষ প্রবণতা থাকে। সেই সাথে, সহকর্মীদের হাঁড়ির খবর নিতেও অনেকের বেশ আগ্রহ থাকে। এসব বিষয় একদম পরিহার করতে হবে। কেননা সহকর্মী সম্পর্কে ভালো ধারণা না রাখলে আপনারই তার সাথে কাজ করতে সমস্যা হবে।


অফিসে যেকোনো সময় প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে আপনার কল বা ম্যাসেজ আসতে পারে। সেক্ষেত্রে আপনার ফোনের রিংটোন যদি হয় কোনো জোর আওয়াজের গান, তখন আপনার সহকর্মীরা বেশ বিরক্তই হবে আপনার উপর। আপনার পছন্দের রিংটোন যাই হোক না কেন অফিসে অবশ্যই ভলিউম কমিয়ে রাখুন, ভালো হয় রিংটোন অফ করে রাখলে।


অফিসে বস বা অন্য সহকর্মীদের সাথে গুরুত্বপূর্ণ মিটিং চলছে তখন হঠাৎ আসা ম্যাসেজটি নিয়ে হামলে না পড়াই ভালো, যদি তা মিটিং সম্পর্কিত না হয়। কেননা, যেকোনো আলোচনার মাঝ পথে থামিয়ে দিলে অন্যরা আপনার দিকে অবশ্যই একটু বিরক্তির চোখে তাকাবে। তাই ফোন বা ট্যাব যেখানেই ম্যাসেজ আসুক না কেন, মিটিং বা গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার সময় এই কাজটি থেকে বিরত থাকাই ভালো।




আসলে দিনের বেশির ভাগ সময় অফিসেই কাটাতে হয় আমাদের। কাজের ফাঁকে ফাঁকে কথা বলা বা গল্প করা কাজেরই একটি অংশ। তবে, অনেকে এটিকে আবার বিরক্তির পর্যায়ে নিয়ে যান। অনেকেই অফিসে ঢুকেই অন্যের সাথে তার আসার পথের সুবিধা অসুবিধার ফিরিস্তি দেয়া থেকে শুরু করে পরিবারের সমস্যার কথা তুলে ধরা বা অযথাই হাসিঠাট্টা করা। এ ব্যাপারগুলো একেবারেই বাক্তিগত। সমস্যা থাকতেই পারে, তাই বলে প্রয়োজন নেই তা প্রত্যেককে জানানো।


অনেক সময় দেখা যায়, অফিসে অন্যদের খাবার সম্পর্কে আগ্রহ প্রকাশ করা বা অনেকসময় খাওয়া অনেকের নিত্যনৈমত্তিক ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। ভালো হয় নিজের খাবার নিজে খাওয়া। অন্য সহকর্মী কী খেল তা নিয়ে গবেষণা করে নিচু মানসিকতার পরিচয় দেয়া থেকে বিতর থাকুন। তবে হ্যাঁ, সহকর্মী যখন আপনার জন্যও খাবার নিয়ে আসবেন, তখন তা অবশ্যই গ্রহণ করা উচিত। তবে অনেক খাবারে অনেকের এলার্জি থাকে। তখন আবার ভদ্রতার খাতিরে সেই খাবার খেয়ে নিজে অসুস্থ হয়ে পড়বেন না।


আমরা যে কেউ যেকোনো সময় অসুস্থ হয়ে পড়তে পারি। অনেকের ঠান্ডায় এলার্জির কারণে শীত-গরম সব সময়ই সর্দি জ্বরে ভুগেন। সর্দি জ্বর বা ভাইরাসজনিত রোগে আক্রান্ত হলে সহকর্মীদের সঙ্গ এড়িয়ে চলাই ভালো। কেননা, ভাইরাসবাহিত রোগ যেকোনো সময় যে কেউকে আক্রমণ করতে পারে। অন্যকে অসুস্থ করার দায়িত্ব নিশ্চয়ই আপনার নয়।


সহকর্মীর পোশাক নিয়ে অন্যদের সাথে আলোচনা সমালোচনা না করাই ভালো। পোশাকটি যদি অফিস ডেকোরামকে ভঙ্গ করে তবে সেটি সহকর্মীটিকে ডেকে বলাই ভালো। তার আড়ালে অন্যদের সাথে তাকে নিয়ে কথা বলা মোটেই উচিত নয়। আর অফিসে উগ্র সাজ-পোশাক এড়িয়ে চলতে হবে সব সময়।


অফিসে সহকর্মীদের মধ্যে যেহেতু সুন্দর একটি সম্পর্ক তৈরি হয়ে যায়, তাই তাদের জন্মদিন বা নববর্ষ অথবা বিশেষ দিনে উইশ করুন। সম্পর্ক ভালো হলে গিফট দিন, দিনটিকে সেলিব্রেটও করতে পারেন।





তাহমিনা তাসির

0/Post a Comment/Comments

Previous Post Next Post