আপনি অভিশাপে বিশ্বাস করেন আর নাই করেন, এই পৃথিবীতে এমন
অনেক প্রাচীন বস্তু আছে যেগুলো যখন যার কাছে ছিলো তারা সবাই নানাভাবে দুর্ঘটনার
শিকার হয়েছে। মৃত্যু, রোগ বা দুর্ভাগ্য যাই হোক এমন অনেক কিছুই অনেকের জীবনে ঘটেছে
যার যৌক্তিক ব্যাখ্যা দেয়া আজ পর্যন্ত সম্ভব হয়নি।
বিশ্বের সবচেয়ে অভিশপ্ত এবং রহস্যময় ৫টি বস্তু নিয়ে দেখুন
বাংলা তথ্যচিত্র-
বাংলায় দুর্দান্ত সব ভিডিও দেখতে আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন- Funny Frog Creatives
বিশ্বের সবচেয়ে অভিশপ্ত এবং রহস্যময় ৫টি বস্তু
রাজা তুতের সমাধী
অভিশপ্ত বস্তু সম্পর্কে খুব বেশি না জানলেও আপনি হয়তো তুতেনখামেনের মমির অভিশাপ সম্পর্কে কিছু না কিছু শুনেছেন। ১৯২৩ সালে প্রত্নতাত্বিকরা মিশরের রাজা তুতেনখামেনের সমাধীর সন্ধান পায়। সমাধী ছিলো প্রচুর মূল্যবান ধন সম্পদে পরিপূর্ণ আর সেই সাথে একটি অভিশাপও ছিলো বলে বিশ্বাস করেন অনেকে।
রাজা তুতের সমাধী। Photo: Public Domain |
আর তার প্রমাণ হিসেবে এই সমাধী খোড়াখুড়ির সাথে যারা জড়িত
ছিলো তারা সবাই একে একে মারা যেতে লাগলো। আর এই অভিশাপের প্রথম শিকার হয় এই
অভিযানের অর্তের যোগানদাতা লর্ড কারনাভন। মশার কামড়ে দুরারোগ্য রোগে ভুগে মারা যান
তিনি। এই সমাধী আবিষ্কারের ১০ বছরের মধ্যে সমাধীর সাথে
সম্পর্কযুক্ত ২০ জন ব্যক্তির অপঘাতে মৃত্যু হয়।
দ্যা হোপ ডায়ামন্ড
সম্ভবত এটিই বিশ্বের সবচে বিখ্যাত রত্ন। কথিত আছে এই হিরার ওপর একজন ধর্মযাজক অভিশাপ দিয়েছিলেন এরকম যে এই হিরার সংস্পর্শে আসবে সেই অভিশাপগ্রস্ত হয়ে পড়বে।
দ্যা হোপ ডায়ামন্ড। Photo: wikipedia.org |
এই কাহিনী সত্য না মিথ্যা সে হিসেব কষার আগে জেনে রাখুন,
বাস্তবিকই যে কেউ এই হিরার সাথে কোনো না কোনোভাবে সম্পর্কযুক্ত ছিলো তাদের জীবনে
নেমে এসেছিলো দুর্ভাগ্যের কালো ছায়। এমনকি যে ব্যক্তি এই হিরাটা চুরি করেছিলো সে
কয়েকদিনের মধ্যে জ্বরে ভুগে মারা যায়। এই হিরাটা দীর্ঘদিন ফরাসিদের অধীনে ছিলো। সেখানে যে সব
পরিবারের কাছে এই হিরাটা ছিলো তাদের সবাই জটিল সব রোগে ভুগেছে, এমনকি অনেকের
অপঘাতে মৃত্যুও হয়েছে।
নানা দুর্ঘটনার পর এই হিরাটি জাদুঘরে দান করে দেয়ার
সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। যে ব্যক্তি এই হিরাটা স্মিথসোনিয়ান মিউজিয়ামে নিয়ে গিয়েছিলো সে
মারাত্মক গাড়ি দুর্ঘটনার শিকার হয়। এমনকি তার বাড়িও আগুনে পুড়ে যায়।
বাসানোর ফুলদানি
১৫ শতকের দিকে ইতালির এক বিয়েতে কনেকে এই ফুলাদানিটি উপহার দেয়া হয়েছিলো। সেদিনই সন্ধ্যায় ওই কনেকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। তখন তার হাতে ওই ফুলদানিটি ধরা ছিলো।
বাসানোর ফুলদানি। Photo: warehouse-13-artifact-database.wikia.com |
ইতিহাস ঘেটে জানা যায় এই ফুলদানিটি কয়েক প্রজন্ম ধরে বেশ
কয়েকজনের রহস্যজনক মৃত্যুর কারণ হয়ে উঠেছিলো। ১৯৮৮ সালে এই ফুলদানিটি নিলামে তোলা হয়। নিলামে বিজয়ী
ক্রেতা এর মাত্র তিন মাস পরই রহস্যজনক কারণে মারা যায়। ওই ফুলদানিটি পরবর্তীতে আরো
অনেকের কাছেই গিয়েছে, এবং রহস্যজনক কারণে মাস খানেকের মধ্যেই সবার মৃত্যু হয়েছে। অনেকে বিশ্বাস করেন বর্তমানে ওই ফুলদানিটি লোকচক্ষুর আড়ালে
মাটির নিচে পুতে রাখা হয়েছে যাতে আর কারো ক্ষতি করতে না পারে।
বরফ মানব
১৯৯১ সালে ইউরোপের আল্পস পর্বতমালার একটি গ্লেসিয়ার থেকে মোটামুটি অক্ষত একটি মমি আবিষ্কার করা হয়। বরফে রক্ষিত থাকায় এই মমির নামকরণ করা হয়েছিলো দা আইসম্যান বা বরফ মানব। বরফ মানবকে পরীক্ষা করার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় ল্যাবরেটরিতে।
বরফ মানব। Photo: www.seeker.com |
তুতেনখামেনের মতো এই মমিও অভিশাপ নিয়ে এসেছিলো। এই মমির
সাথে সম্পর্কযুক্ত সাত জন্য ব্যক্তিই অপঘাতে মারা যায়। এদের মধ্যে চার জন মারা
গিয়েছিলো ভয়ংকর গাড়ি দুর্ঘটনায়। মমিটি যে ব্যক্তি প্রথম আবিষ্কার করে কিংবা যে গবেষক মমিটি
পরীক্ষা নীরিক্ষা করেছিলো তারা সবাই রহস্যজনকভাবে মারা যায়।
বাসবির চেয়ার
ইংল্যান্ডের উত্তর ইয়র্কশায়ারের থার্স্ক মিউজিয়ামের দেয়ালে একটি চেয়ার দেয়ালে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে যাতে কেই ভুলেও ওই চেয়ারে বসতে না পারে। এর মূল কারণ হচ্ছে, বিশ্বাস করা হয় ওই অভিশপ্ত চেয়ারে যেই বসবে সেই রহস্যজনকভাবে মারা যাবে।
বাসবির চেয়ার। Photo: www.ThirskMuseum.org |
১৭০০ সালের শুরুর দিকে থমাস বাসবি নামে এক কয়েদিকে
মৃতু্দণ্ড দেয়া হয়। দণ্ড কার্যকরের আগে এই চেয়ারে বসেই বাসবি শেষবারের মতো পান
করেছিলো। এরপর থেকেই যে এই চেয়ারে বসেছে সেই কোনো না কোনোভাবে মারা
গেছে। আর আশ্চর্যজনকভাবে এই চেয়ারে বসার ঘন্টাখানেকের মধ্যেই সবার মৃত্যু হয়েছে। চেয়ারটি অভিশাপগ্রস্ত উল্লেখ করে সেটি মিউজিয়ামে দান করে
দেয়া হয় এক শর্তে যাতে কেউ ওই চেয়ারে বসতে না পারে।
Image
Credit:
The Hope
Diamond
The
Basano Vase
Iceman
Mummy
busby's
stoop chair