ত্বকের যত্নে মৌসুমি ফল; ঘরে বসেই নিজেকে করে তুলুন আকর্ষণীয়



তরুণীরা এখন অনেক বেশি ত্বক সচেতন। বিশেষ করে শহুরে তরুণীদের বেলায় তো ত্বক সবসময় সতেজ আর সজীব থাকা চাই-ই চাই। ত্বকের নানাবিধ প্রয়োজনে এই ত্বক সচেতন তরুণীদের একমাত্র ভরসা বিউটি পারলারগুলো। অনেকে আবার কাজের চাপে হয়তো পারলারে তেমন একটা যেতে পারেন না। যে কারণে বাইরে গেলে মনের ভেতর এক ধরনের অস্বস্তি নিয়ে চলাফেরা করেন অনকেই। যারা এই ধরনের সমস্যায় ভুগছনে বা যারা নিয়মিত পারলারে যান, তাদের সবার জন্য বলছি- শুধু পারলার নয়, চাইলে ঘরে বসেও আপনি নিজে নিজে নিতে পারেন আপনার ত্বকের সঠিক পরিচর্যা।



ত্বকের যত্নে মৌসুমি ফল; ঘরে বসেই নিজেকে করে তুলুন আকর্ষণীয় 


বাজারে সবসময় কিছু না কিছু মৌসুমি ফল পাওয়া যায়। এই মৌসুমি ফলগুলো দিয়েই নিতে পারেন ত্বকের যত্ন। এতে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। আর এতে ত্বকও থাকে সজীব ও সতেজ। আসুন এবার জেনে নেয়া যাক মৌসুমি ফল দিয়ে ত্বকের যত্ন নেয়ার কৌশল:

বেদানা

বেদানা খেতে যেমন সুস্বাদু, তেমনই এর অনেক গুণও আছে। শুষ্ক মৌসুমে শুষ্ক ত্বকের কোষ নির্জীব হয়ে পড়ে, খসখসে হয়ে যেতে থাকে। ত্বকের নির্জীব কোষগুলোকে সজীব করে তুলতে বেদানা খুবই কার্যকরী। দুই টেবিল চামচ বেদানার দানা ও এক কাপ যবের গুড়া একসঙ্গে ব্লেন্ড করে নিন। এরপর এর সঙ্গে দুই চামচ মধু ও মাখন মিশিয়ে নিন। পুরো ত্বকে তা মাখিয়ে কিছুক্ষণ রেখে তারপর ধুয়ে ফেলুন। বাইরে যাওয়ার সময় সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। দেখবেন আপনার খসখসে ত্বক ধীরে ধীরে কেমন সতেজ হয়ে উঠছে।

পেঁপে

পেঁপে স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী একটি ফল। ঠিক তেমনই তৈলাক্ত ত্বকের জন্য পেঁপের গুণাগুণের জুড়ি মেলা ভার। যাদের তৈলাক্ত ত্বক, শুষ্ক মৌসুমে ঘাম ও অতিরিক্ত তেলের কারণে যাদের ত্বকে ফুসকুড়ি বা ব্রণ দেখা যায়, তারা এর হাত থেকে রক্ষা পেতে দুই চামচ পরিমাণ পেঁপের শাঁসের সঙ্গে এক চামচ দই ও এক আউন্স পরিমাণ অ্যালোভেরা মিশিয়ে নিন। সঙ্গে ল্যাভেন্ডার তেলও এক চামচ মিশিয়ে নিতে পারেন, তারপর ব্লেন্ড করুন। এই মিশ্রণটি মুখে মেখে নিয়ে কিছুক্ষণ পর ধুয়ে ফেলুন। এভাবে কয়েকদিন মিশ্রণটি বানিয়ে ত্বকে দেওয়ার পর দেখবেন আপনার মুখ থেকে ব্রণ দূর হয়ে গেছে এবং ত্বক আরো সতেজ হয়ে উঠেছে।

স্ট্রবেরি

যাদের ত্বক কিছুটা শুষ্ক আবার কিছুটা তৈলাক্তও তাদের জন্য স্ট্রবেরি খুব উপযোগী একটি ফল। এই ফলটি এখন বাজারে সব সময় পাওয়া যায়। আধা কাপ পরিমাণ সতেজ বা ফ্রিজে রাখা স্ট্রবেরি নিন, সঙ্গে এক কাপ পরিমাণ ঘোল ও আধা চামচ মধু মিশিয়ে ব্লেন্ড করে নিন। এই মিশ্রণটি ত্বকে মেখে নিয়ে কিছুক্ষণ পর ধুয়ে ফেলুন। এরপর হালকা করে ত্বকে একটু বরফও মেখে নিতে পারেন।নিয়মিত ব্যবহার করলে কয়েকদিনের মধ্যেই বুঝতে পারবেন আপনার ত্বক আগের চেয়ে কেমন কোমল ও মসৃণ হয়ে উঠেছে।



আপেল

যাদের ত্বক স্বাভাবিক, শুষ্ক মৌসুমে ধূলাবালিতে তাদের ত্বক আর স্বাভাবিক থাকে না, কালচে হয়ে যায়। এর জন্য প্রায়ই পারলারে গিয়ে ফেসিয়াল করাতে হয়। তবে তারা চাইলে ঘরে বসেই নিতে পারেন ত্বকের যত্ন। প্রথমে একটি আপেল টুকরো করে কেটে তাতে এক চামচ চিনি ও চার কাপ দুধ মিশিয়ে ব্লেন্ড করে নিন। এরপর এই মিশ্রণটি ত্বকে লাগিয়ে ১৫ মিনিট পযর্ন্ত অপেক্ষা করে ধুয়ে ফেলুন। এতে আপনার ত্বক আরো উজ্জ্বল হয়ে উঠবে।

তরমুজ

গ্রীষ্মকালে বাজারে তরমুজ পাওয়া যায়। এটা যেমন তেষ্টা নিবারণ করে তেমনি ত্বকের জন্যও বেশ উপকারী। গ্রীষ্মকালে অতিরিক্ত ঘাম আর ধূলার কারণে ত্বকের সজীবতা নষ্ট হয়ে যায়। এ সময় ত্বকের সজীবতা ফিরিয়ে আনতে তরমুজের রস মুখমণ্ডল ও নাকের পাশে লাগিয়ে রাখুন। শুকিয়ে গেলে তারপর ধুয়ে ফেলুন। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য তরমুজ ব্লেন্ড করে তাতে আধা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে পেস্ট করে নিন। মিশ্রণটি মুখমণ্ডলে মেখে শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করে ধুয়ে ফেলুন। শুষ্ক ত্বকের জন্য পরিমাণ মতো তরমুজ ব্লেন্ড করে তাতে একটু দুধ ও সাজিমাটি মিশিয়ে নিন। এরপর পাতলা করে ত্বকে মেখে নিন। কিছুক্ষণ পর ধুয়ে ফেলুন। এতে ত্বক আর্দ্র থাকে এবং উজ্জ্বল হয়ে উঠে।

পেয়ারা

চোখের নিচে কালো দাগ (ডার্ক সার্কেল) দূর করার জন্য পেয়ারা ব্যবহার করতে পারেন। প্রথমে একদম পাঁকা একটি পেয়ারা দুই ভাগ করে কেটে নিন। পেয়ারার ভেতরের নরম অংশ বের করে চোখের নিচের কালো দাগে ঘষে ঘষে মেখে নিন। এভাবে কিছুদিন ব্যবহার করার পর দেখবেন চোখের নিচের কালো দাগ একদম দূর হয়ে গেছে।



নুসরাত শাহপার তুবা

0/Post a Comment/Comments

Previous Post Next Post