সুস্থ থাক পোষা কুকুর-খাঁচার পাখি



শিশুরা পোষা প্রাণীর সাথে বিশেষ করে বিড়াল, খরগোশ, কুকুরের সাথে খেলতে দারুন ভালোবাসে। শুধু শিশুরাই বা কেন, আমাদের অনেকের শখও আছে কুকুর-বিড়াল পোষার নয়তো বারান্দায় বা ছাদে কবুতর আর পাখি পোষার। পশু-পাখি পোষার জন্য শুধু আগ্রহই তো শেষ নয়, পোষা প্রাণীদের সুস্থতার দিকটিও সমান গুরুত্বের। জেনে নিন কয়েকটি কার্যকর টিপস।


সুস্থ থাক পোষা কুকুর-খাঁচার পাখি!



পোষা প্রাণীটি যদি হয় কুকুর-বিড়াল বা খরগোশ


১. কুকুর বেড়াল আঁচড় দিলে শিশুদের যাতে তেমন কোনো ক্ষতি না হয় তাই পোষা প্রাণীকে বাসায় আনার পর পরই রেবিস ভ্যাকসিন দিতে হবে। তা হলে ক্ষতির কোনো আশংকাই থাকবে না।


২. পোষা প্রাণীটি বাড়ির যে স্থানে রাখা হবে সেই অংশটা যেনো অবশ্যই আলো বাতাসে পূর্ণ হয়। আলো বাতাস এদের শরীরের জন্য খুবই দরকারী।


৩. বাড়ির শিশুটি পোষা প্রাণীর সাথে খেলা করে, এদের শরীরও স্পর্শ করে। তাই কুকুর বিড়ালের শরীর সর্বদা পরিস্কার রাখতে হবে। এদের অপরিচ্ছন্ন শরীরে পোকাও বাসা বাঁধে। তা যেনো কিছুতেই না হয় সেদিকে বিশেষ নজর রাখতে হবে। সপ্তাহে অন্তত একদিন বা তার বেশি বার জীবাণুনাশক শ্যাম্পু দিয়ে এদের গোসল করাতে হবে। গোসল করানোর পর শরীর ভাল মতো মুছে শুকিয়ে দিতে হবে।


৪. পোষা প্রাণীটিকে গোসল করাবার সময়ে অত্যন্ত সাবধান থাকতে হবে যেন কানে পানি না ঢোকে। আর খরগোশকে গোসল করাবার প্রয়োজনই নেই। খরগোশ পানি সহ্য করতে পারে না। তবে পরিষ্কার কাপড় দিয়ে মুছিয়ে দিলে পরিচ্ছন্ন থাকবে।


৫. দিনে ২ বার কুকুরের শরীর মোটা দাঁত ওয়ালা চিরুনি দিয়ে আঁচড়াতে হয়। এতে পশম মসৃণ থাকে আর পোকাও হয় না। পশমওয়ালা বেড়াল হলে তাদেরকেও ব্রাশ করা যেতে পারে।


৬. পোষা প্রাণীর খাবার আর পানির পাত্রটি অবশ্যই আলাদা রাখতে হবে। মাঝে মাঝে খাবার থেকে এদের ফুড পয়জনিং হতে পারে তাই খাবারের দিকে বিশেষ যত্নশীল হতে হবে। বাসি খাবার দেয়া যাবে না, খাবার শেষ হওয়ার সাথে সাথে পাত্রটি পরিস্কার করে রাখতে হবে। তাহলে এতে জীবাণুর সংক্রমণ হবে না।




৭. পোষা প্রাণীকে সব সময় সুষম খাদ্য দিতে হয়। কুকুরকে চর্বি, মশলা বিহীন সিদ্ধ মাংস, বিড়ালকে দুধ, মাছ দেয়া যেতে পারে। ভাতের ঘন মাড় কুকুর বেড়ালের জন্য ভালো। খরগোশকে কচি ঘাস, শসা, গাজর দিতে হয়। এছাড়া বাজারে এদের জন্য তৈরি খাদ্যও কিনতে পাওয়া যায়।


৮. শীতের সময় শখের পোষা প্রাণীটির বাড়তি উষ্ণতা নিশ্চিত করতে হবে। বৃষ্টি বা ঠান্ডায় এদের যাতে কোনো ক্ষতি না হয় সেদিকে অবশ্যই নজর রাখতে হবে।


৯. খরগোশ যে খাঁচায় রাখা হবে সেই খাঁচাটি সপ্তাহে অন্তত একদিন ভালো করে জীবানুনাশক দিয়ে পরিস্কার করতে হবে। তা হলে জীবাণু ছড়ানোর আশংকা থাকে না।




পোষা প্রাণীটি যখন পাখি


১. পাখির খাঁচাটি বাঁশের তৈরি হলে বেশি ভালো হয় কারন ষ্টিলের খাঁচা কোনো কোনো পাখির ত্বকের ক্ষতি করে।


২. পাখিকে সব সময় পাখির জন্য নির্দিষ্ট করা খাবারই দিতে হয়। বাজারে পাখির জন্য প্যাকেটজাত খাবার কিনতে পাওয়া যায় যা বেশ কম দাম। পাখিকে খাবার হিসেবে শস্য দানা, গম, ভুট্টা, ধান, তিল, তিশি, কাউন, সূর্যমুখী ফুলের বীজ দেয়া যেতে পারে।


৩. পাখিকে সব সময় আলো আর বাতাসের কাছাকাছি রাথতে হয়। বৃষ্টির দিনে যাতে পাখির শরীরে পানি না লাগে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।


৪. পাখির খাঁচায় ছোট ছোট পেট ফুটো মাটির কলস ঝুলিয়ে বা কোনো পানির পাত্র রাখা ভালো যাতে সে যে কোনো সময় পানি পান করতে পারে। খাঁচার মাঝে খড় দিয়ে দিলে পাখিটি চাইলেই সেখানে বসতে পারবে।


৬. যে খাঁচায় পাখি রাখা হবে তা কয়েক দিন পর পর পরিস্কার করা জরুরি। অন্যথায় পাখির বিভিন্ন রোগ বালাই হতে পারে। যে কোনো সমস্যায় দেরি না করে কোনো বিশেষজ্ঞ বা ডাক্তারের পরামর্শ নেয়াটাই সমীচিন।




জোবায়ের মিলন

0/Post a Comment/Comments

Previous Post Next Post