বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ ৫টি গুহা যা আপনাকে বিস্মিত করবে !!



বিশ্বের সব দেশেই কম বেশি কেইভ বা গুহা দেখা যায়কিন্তু আকার বা বৈচিত্রময় গঠনশৈলির কারণে কিছু কিছু গুহা আমাদের অবাক করে, বিস্মিত করে সেই সাথে জানলে অবাক হতে হয় বিশ্বে এখনো অনেক গুহা রয়েছে যেগুলো সম্পর্কে খুব কমই জানতে পেরেছে মানুষ। বিশ্বের সবচেয়ে বড় ৫টি গুহা নিয়ে থাকছে এই প্রতিবেদন।


বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ ৫টি গুহা



৫. অপটিমাসটাইক্না গুহা

ইউরো-এশিয়ার সবচেয়ে বড় এবং বিশ্বের ৫ম দীর্ঘতম গুহা অপটিমাসটাইক্না। ইউক্রেনের কোরোলিভকা গ্রামে রয়েছে অসাধারণ এই জিপসাম গুহাটি। মূলত অসংখ্য ছোটোবড় গুহা এবং সুরঙ্গ ছড়িয়ে আছে এই গুহার ভেতর। যে কারণে এটি গোলকধাঁধার গুহা নামেও পরিচিত। ১৯৬৬ সালে মানুষ এই গুহাটির সন্ধান পায়। তারপর থেকে আজ পর্যন্ত ৫০টিরও বেশি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে এখানেযা থেকে এই গুহার ভেতরে আনুমানিক ২৩০ কিলোমিটার সুরঙ্গপথের মানচিত্র তৈরি করা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু এই গুহার আয়তন কতটা বা কতদূর পর্যন্ত ছড়িয়ে গেছে সুরঙ্গপথ তা নিয়ে অনুসন্ধান চলছে এখনো২০০৮ সালে এই গুহাটিকে ইউক্রেনের প্রাকৃতিক বিস্ময় হিসিবে ঘোষণা দেয়া হয়।

৪. সিস্টেমা ওক্স বেল হা

মেক্সিকোর কুইনটানা রোতে রয়েছে নয়নাভিরাম এই গুহা। আর এর মূল আকর্ষণ হচ্ছে এই গুহার বেশিরভাগটাই জলমগ্ন। অর্থাত এই গুহায় ঘুরতে চাইলে আপনাকে ভালো ডুবুরি হতে হবে। তবে, একবার এই গুহায় প্রবেশ করতে পারলে আপনি বিস্মিত এবং অবাক না হয়ে পারবেন না। প্রাচীন মায়ান শব্দ ওক্স বেল হা থেকে নামকরণ করা হয়েছে গুহাটির। এর বাংলা করলে দাড়ায় পানির তিনটি প্রবাহ। ২০১৭ সালের মে মাস পর্যন্ত এই গুহার ভেতরে ২৭০ কিলোমিটারের বেশি জলমগ্ন সুরঙ্গপথ আবিষ্কার করা সম্ভব হয়েছে। যে কারণে এটি এখন পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ জলমগ্ন গুহা এবং শুকনো গুহা যোগ করলে বিশ্বের চতুর্থ দীর্ঘতম গুহা।



৩. রত্নগুহা

বিশ্বের ৩য় দীর্ঘতম গুহাটি রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাউথ ডাকোটায়। এখন পর্যন্ত এই গুহার ৩১০ কিলোমিটারের বেশি সুরঙ্গপথ আবিষ্কার করা সম্ভব হয়েছে। বিশ্বব্যাপী এই গুহাটি রত্নগুহা নামেই বেশি পরিচিত। ১৯০০ সালে দুজন স্থানীয় প্রসপেক্টর এই গুহাটির সন্ধান পান। গুহার ভেতর ক্যালসাইট ক্রিস্টালের আশ্চর্য সম্ভার দেখে স্তম্ভিত হয়ে যান তারা। যার ফলে তারা গুহাটির নামই দিয়ে দেন রত্নগুহা। মার্কিন সরকার ১৯০৮ সালে এই গুহাটিকে ন্যাশনাল মনুমেন্ট হিসেবে ঘোষণা দেয়। ১৯০০ সালে আবিষ্কৃত হলেও ১৯৫৯ সাল পর্যন্ত গুহাটির মাত্র ২ মাইল এলাকা জরিপ করা হয়েছিলো। ১৯৬৫ সালের পর বেশ কিছু নির্মাণকাজ শেষে দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয় এই গুহাটি।

২. সিস্টেমা সাক আকটুন

এটি এখন পর্যন্ত বিশ্বের দীর্ঘতম ডুবো গুহা। জলমগ্ন এই গুহা প্রণালীর মোট দৈর্ঘ ২৫৯.৫ কিলোমিটার। সম্প্রতি ৮৪ কিলোমিটার দীর্ঘ ডস ওহোস সিস্টেমের সাথে সাক আকটুনের যুক্ত থাকার প্রমাণ পেয়েছেন গবেষকরা। ক্যারীবিয় উপকূলের ইউকাটান উপদ্বীপ থেকে শুরু হয়ে এই গুহা ছড়িয়ে গেছে মেক্সিকোর কুইনটানা রোর তুলুম গ্রাম পর্যন্ত। সাক আকটুন গুহার নামকরণ করা হয়েছিলো প্রাচীন মায়া শব্দ থেকে। এর মানে শ্বেত গুহা প্রণালী। ২০০৭ সালের পরই এই গুহার ভেতরে ব্যাপকভাবে গবেষণা শুরু হয়েছিলো। ২০০৮ সালে একদল বিশেষজ্ঞ অনুসন্ধান শুরু করেন জলমগ্ন এই গুহায়। ১৪১ ফুট গভীরে তারা খুঁজে পান একটি মানুষের খুলি যা ওই এলাকায় মানুষের বসতির সবচেয়ে পুরোনো নিদর্শণ।

১. ম্যামথ গুহা

ম্যামথ কেইভ ন্যাশনাল পার্ক বা ম্যামথ ফ্লিন্ট রিজ কেইভ সিস্টেমটি রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্টাকি অঙ্গরাজ্যে। যদিও এই গুহাটি ম্যামথ গুহা নামে পরিচিত কিন্তু এর ভেতর এখন পর্যন্ত কোনো ম্যামথের ফসিল পাওয়া যায়নি বা ম্যামথের সাথে এর সম্পর্ক নেই একেবারেই। ১৯৪১ সালে এই গুহাটিকে দেশটির ন্যাশনাল পার্কে রুপ দেয়া হয়েছিলো মিসিসিপিয়ান যুগে তৈরি হওয়া এই গুহাটি আক্ষরিক অর্থেই বিশাল। এখন পর্যন্ত এই গুহার ভেতর ৬৬৩ কিলোমিটার দীর্ঘ সুরঙ্গ পথের ম্যাপ তৈরি করা সম্ভব হয়েছে। বিরল প্রজাতির বাদুর ছাড়াও কেইভ স্যালামান্ডর এবং দুই প্রজাতির চোখবিহীন মাছের বাস রয়েছে এই গুহার গভীরে। 





0/Post a Comment/Comments

Previous Post Next Post