মাছ যে উড়তে পারে এ তথ্য তো
নিশ্চয়ই জানেন। কিন্তু জানেন কি, কি কারণে এবং কিভাবে উড়ুক্কু মাছেরা সসমুদ্রের
পানি ছেড়ে আকাশ দিয়ে উড়ে বেড়ায়? এই প্রতিবেদনে জানবেন বিস্ময়কর উড়ুক্কু মাছের নানা অজানা তথ্য।
উড়ুক্কু মাছ যে কারণে পানি ছেড়ে বাতাসে ভেসে বেড়ায়
উষ্ণমন্ডলের প্রায়
সব সাগরেই দেখতে পাওয়া যায় এই উড়ুক্কু মাছ। তবে বিস্ময়কর বিষয় হচ্ছে, এই মাছের
অস্তিত্ব কিন্তু ছিলো পাখি বা ডাইনোসরদের
আগে থেকেই। গবেষকদের মতে, ২৪ কোটি বছর আগে থেকেই সমুদ্রে রয়েছে উড়ুক্কু
মাছেরা। জীবাশ্ম বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, পাখিদের
আকাশে ওড়ার ৮ কোটি বছর আগে থেকেই সমুদ্রে রাজত্ব ছিলো উড়ুক্কু মাছেদের।
আকারে ছয় ইঞ্চির
মতো লম্বা এই মাছের ওড়ার জন্য কোনো ডানা নেই। যা আছে তা হলো চ্যাটাল, ঢাউস এবং ফাঁপা বক্ষপাখনা। ভেতরে বাতাস ভরা থাকায় পাখনার ওজনও হয় হালকা। এই বক্ষপাখনার সাহায্যেই উড়ুক্কু মাছেরা বাতাসে ভেসে থাকতে পারে। ওড়ার এই পদ্ধতিকে বলা হয় গ্লাইডিং।
সামুদ্রিক এই
মাছেরা সমুদ্রে ঝাঁক বেধে চলাচল করে। দ্রুত সাঁতার কাটতে কাটতে পানির একেবারে
উপরিভাগে উঠে আসে এরা। পরে পাখনা মেলে উড়াল দেয় বাতাসে। বাতাসের গতি বা ঢেউয়ের উপর নির্ভর করে এরা ৩০ সেকেন্ড থেকে এক
মিনিট পর্যন্ত বাতাসে ভেসে থাকতে পারে। কোনো কোনো
প্রজাতি পানির ১০ মিটার উচ্চতায় প্রায় ৪০০ মিটার দূরত্ব অতিক্রম করতে পারে। উড়ুক্কু
মাছের গতি ঘণ্টায় ৭০ কি.মি. বা ৪৫ মাইলেরও বেশি হতে পারে।
এই মাছের বাতাসে উড়ার
পেছনের কারণ নিয়ে দুটি ধারণা প্রচলিত আছে। প্রথমত প্ল্যাঙ্কটন জাতীয়
খাবার খেতে পানির ওপরে উঠতে হয় উড়ুক্কু মাছদের। আর দ্বিতীয় কারণটি হচ্ছে, ডলফিন, স্কুইড
বা বড় শিকারী প্রাণীদের আক্রমণ থেকে নিজেদের রক্ষার জন্যই পানি ছেড়ে বাতাসে ভাসতে
শুরু করেছিলো উড়ুক্কু মাছেরা।
উড়ুক্কু মাছ বলতে
কোনো নির্দিষ্ট প্রজাতির মাছকে বোঝায় না। বিশ্বজুড়ে
৬৪ প্রজাতির উড়ুক্কু মাছের খোঁজ পাওয়া গেছে। আলোর প্রতি এই মাছের মারাত্মক দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে আলোর ফাঁদ
পাতে মাছ শিকারীরা। খেতে সুস্বাদু এই মাছটি বাণিজ্যিকভাবে
জাপান,
ভিয়েতনাম, বার্বাডোস ও ভারতে প্রচুর ধরা হয়। ক্যারিবীয় দ্বীপরাষ্ট্র বার্বাডোসের নামই একসময় হয়ে গিয়েছিলো 'উড়ুক্কু
মাছের ভূমি'।
Post a Comment