টাকা খরচ করা খুব সহজ, ঠিক যতটা কঠিন সঞ্চয় করা। প্রতিদিনই প্রয়োজন অপ্রয়োজনে আমরা
টাকা খরচ না করে পারি না। আমরা অনেকেই হয়তো চেষ্টা করি বাড়তি খরচ না করে সঞ্চয়
করার। কিন্তু অসচেতনতা বা অপরিনামদর্শিতা যেটাই হোক, শেষ পর্যন্ত হয়তো আটকে রাখা যায় না বাড়তি খরচের স্রোত। তবে, বাস্তবতা হলো, সদিচ্ছা আর চেষ্টা থাকলে আপনার কষ্টের টাকার অনেকটাই বাঁচাতে পারবেন খুব সহজে।
খুব সহজে টাকা বাঁচানোর ৩২ টিপস
১. টেলিভিশন কম দেখুন। এতে করে
বিভিন্ন অপ্রয়োজনীয় পণ্যের রাশিরাশি বিজ্ঞাপন আপনাকে প্রলুব্ধ কমই করতে পারবে।
২. একসাথে অনেকগুলো ব্যাংকে
অ্যাকাউন্ট না রেখে একটি বিশ্বস্ত ব্যাংকের সাথেই আপনার আর্থিক লেনদেন সীমিত
রাখুন। এতে করে বছর বছর অ্যাকাউন্ট মেইনেটেনেন্স বাবদ গুনতে হবে না বাড়তি টাকা।
৩. কূপন বা ফ্রি অফার পেলে শপিং করতে
দ্বিধা করেবন না।
৪. শপিংয়ে যাওয়ার আগে অবশ্যই একটি
লিস্ট করুন।
৫. রেস্টুরেন্ট বা পার্টি সেন্টারের
জন্য বাড়তি টাকা কেন গুনবেন? জন্মদিন বা
বিবাহবার্ষিকী, অতিথিদের নিমন্ত্রণ করুন নিজ
বাসাতেই।
৬. ফেলে দিয়ে নতুন করে কেনার আগে, যেসব জিনিস মেরামত করে আবার ব্যবহার করা সম্ভব, সেগুলো অবশ্যই মেরামত করুন।
৭. বিনোদন বা সাময়িক আনন্দ, খুব বেশি খরচ করেত যাবেন না।
৮. টাকাও বাঁচবে আবার স্বাস্থ্যও
ভালো থাকবে কি করে? ফাস্টফুড বা জাংক
ফুড খাওয়া থেকে অবশ্যই বিরত থাকুন।
৯. সিগারেট, অ্যালকোহল বা অন্য কোনো নেশা থাকলে তা অবশ্যই ছেড়ে দিন।
১০. পুরোনো পত্রিকা, ম্যাগাজিন গাদাগাদি করে জমিয়ে না রেখে, বেঁচে দিন।
১১. সম্ভব হলে বাসার সব লাইট
পরিবর্তন করে ‘এলইডি বাল্ব’ ব্যবহার করুন।
১২. চেষ্টা করুন এনার্জি সেভিং
গৃহস্থালী সামগ্রী ব্যবহার করতে।
১৩. কোনো কিছু কেনার আগে সেটার দাম
কত,
কোথায় সবচেয়ে কমে পাওয়া যাবে ইত্যাদি নিয়ে অবশ্যই চিন্তা
করুন,
যাচাই-বাছাই করুন।
১৪. ১০ মিনিটের জন্য ঘর থেকে বের
হলেও তার আগে লাইট, ফ্যান বা এসি
অবশ্যই বন্ধ করুন।
১৫. সামান্য শ্রম বাঁচাতে রিক্সাকে
চিরসঙ্গী করবেন না। বর্তমানে রিক্সা ভাড়া কিন্তু নেহাতই কম নয়।
১৬. অনেকসময় ব্যবহৃত জিনিস কিনে
একদিকে যেমন প্রয়োজন মেটাতে পারেন ঠিকঠিক, অন্যদিকে বেঁচে যাবে বেশ কিছু টাকা।
১৭. হাতে বাড়তি কিছু টাকা পেতে, আপনার অব্যবহৃত জিনিসও দিতে পারেন বেঁচে।
১৮. হাত সবসময় পরিস্কার রাখুন, বিশেষ করে বাথরুম বা খাবার পর। ভাইরাস বা ব্যকটেরিয়াকে দূর
করে আপনি বাঁচাতে পারেন হাসপাতালের বিল।
১৯. অপেক্ষাকৃত দূরে কোথাও যাওয়ার
সময়,
পানি ও শুকনো খাবার বা স্ন্যাক্স সাথে রাখুন।
২০. দাঁড়ি কামাতে দামী ব্র্যান্ডের
ইলেকট্রিক রেজারের পরিবর্তে সাধারণ রেজার ব্যবহার করুন।
২১. দামী শখের পেছনে অর্থ ঢালার
পরিবর্তে শুধুমাত্র বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। এটি নানাভাবেই আপনাকে কাজে দিবে।
২২. অবশ্যই মাংস কম খাওয়ার চেষ্টা
করুন।
২৩. ফোন, ট্যাবলেট বা কম্পিউটার একাধিক ডিভাইসে ইন্টারনেট সেবা চালু
না রেখে যে কোনো একটিকে বেছে নিন।
২৪. গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানি নয়তো
মোবাইল-ইন্টারনেট বা ক্রেডিট কার্ড, সময়মতো পরিশোধ করুন সব বিল। মনে রাখবেন, এক মাস দেরি হলে পরের মাসে গিয়ে কিন্তু খরচ হবে দ্বিগুন, সেইসাথে যদি জরিমানা গুনতে হয়, তাহলে তো কথাই নেই।
২৫. বাসার খবরের কাগজ রাখার অভ্যাস
থাকলে বাসে উঠেই একটা পত্রিকা কিনে ফেলার প্রবণতা পরিহার করুন।
২৬. ঘন ঘন চা-কফি খাওয়ার অভ্যাস আছে? সেক্ষেত্রে নিয়ম করে দুই বেলা চা-কফি খেলে একদিকে যেমন
স্বাস্থ্য ভালো থাকবে অন্যদিকে খরচ হবে না বাড়তি টাকাও।
২৭. বই পড়ার অভ্যাস আছে? রসনা মেটাতে বই না কিনে বরং লাইব্রেরি থেকে বই নিয়ে পড়তে
পারেন। এতে করে বেঁচে যাবে বেশ কিছু টাকা।
২৮. কোনো কিছু কেনার আগে ভেবে দেখুন
জিনিসটি আসলেই আপনার প্রয়োজন কি না?
২৯. মাসের শুরুতেই তৈরি করে নিন
আপনার সারা মাসের খরচের সম্ভাব্য বাজেট।
৩০. বাড়তি খরচ বাঁচাতে মেগাস্টোর বা
বড় শপিংমল থেকে কেনাকাটার অভ্যাস ত্যাগ করুন।
৩১. ঘনঘন রেস্টুরেন্টে গিয়ে খাওয়া
আপনার সঞ্চয়ের একটা বড় অংশ ধসিয়ে দিতে পারে।
৩২. ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ড, শপিংয়ে গিয়ে এসব ব্যবহার করার কথা মাথাতেও আনেবন না। অনেক
অপ্রয়োজনীয় পন্য কেনার লোভ আপনি নাও সামলাতে পারেন।
যাই করুন না কেন, মনে রাখবেন সঞ্চয় করতে গিয়ে যেন কৃপনের খাতায় আপনার নাম চলে
না যায়। প্রয়োজন মিটিয়ে তারপর সঞ্চয় করুন। আর অবশ্যই কখনো কোনো অবস্থাতেই হাল ছেড়ে
দিবেন না,
আপনার আত্মবিশ্বাসই আপনাকে সামনের দিকে নিয়ে যাবে।
নুসরাত শাহপার তুবা
Post a Comment