আধুনিক বিজ্ঞান মহাশূন্য এবং আমাদের অন্তহীন মহাবিশ্বের অনেক তথ্যই আমাদের সামনে হাজির করছে। জানা গেছে মহাবিশ্বের অনেক সত্য যা আমাদের কল্পনার সীমাকেও পেছনে ফেলে দিয়েছে। মহাবিশ্বের ২০টি চমকপ্রদ সত্য নিয়ে থাকছে এই প্রতিবেদন।
মহাবিশ্বের ২০টি চমকপ্রদ সত্য নিয়ে তথ্যচিত্র দেখুন বাংলায়-
মহাবিশ্বের ২০টি চমকপ্রদ সত্য
মহাবিশ্ব। Photo: Public Domain |
১. সূর্যের পর পৃথিবী থেকে সবচেয়ে কাছের নক্ষত্রের নামে প্রক্সিমা সেন্টরি যা ৪.২৪ আলোকবর্ষ দূরে রয়েছে। এই নক্ষত্রটি এত বড় যে ১০ লাখ পৃথিবী এটে যাবে এর ভেতর।
২. মঙ্গল গ্রহে মানুষের বাস এতদিন কল্পবিজ্ঞান গল্প বা মুভিতেই সীমাবদ্ধ ছিলো। কিন্তু আক্ষরিক অর্থেই ২০৫০ থেকে ২১০০ সালের মধ্যে মঙ্গলে ১০ লাখ মানুষের বসবাস নিশ্চিত করতে ইতোমধ্যেই কাজ শুরু করেছে স্পেস এক্স নামে একটি প্রতিষ্ঠান।
৩. আমাদের সৌরজগতে প্লুটোই একমাত্র বামন গ্রহ নয়। মোট ৫টি বামন গ্রহের খোঁজ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় বামন গ্রহের নাম এরিস।
৪. মহাশূন্যে কেমন তাপমাত্রা বিরাজ করে? বিজ্ঞানীদের মতে এতে তারতম্য দেখা যায়। যেমন নক্ষত্রের কাছে তাপমাত্রা অনেক অনেক বেশি। আবার কিছু জায়গা আছে গভীর অন্ধকারে ঢাকা। বিজ্ঞানীদের মতে মহাশূন্যে সর্বোচ্চ ১২১ ডিগ্রি থেকে সর্বনিম্ন হিমাঙ্কের নিচে ১৫৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত হতে পারে।
ভয়েজার নভোযান। Photo: Public Domain |
৫. ১৯৭৭ সালে অন্তহীন মহাবিশ্বের পথে যাত্রা শুরু করে ভয়েজার ওয়ান ও টু। ভয়েজার ওয়ান মানুষের তৈরি একমাত্র নভোযান যা এখন পর্যন্ত মহাশূন্যের সবচেয়ে দূরতম প্রান্তে পৌঁছেছে।
৬. ভয়েজার ওয়ান ও টু এর যাত্রাপথে ভিনগ্রহের কোনো প্রানীর দেখা মিললে তাদের জন্য দুটি নভোযানেই পাঠানো হয়েছে স্বর্ণের তৈরি দুটি রেকর্ড যেখানে গান, ছবি মানুষের কথা বা সমুদ্রের শব্দ ইত্যাদি রয়েছে।
ভীনগ্রহবাসীদের জন্য ভয়েজার ওয়ান ও টু নভোযানে পাঠানো রেকর্ড। Photo: Public Domain |
৭. এখন পর্যন্ত বিশ্বে ২টি স্পেসস্টেশন তৈরি করা হয়েছে। এর একটি চীনের তৈরি তিয়ানগং ওয়ান এবং অন্যটি ইন্টারন্যাশনাল স্পেসস্টেশন বা আইএসএস যা যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, জাপান, কানাডা এবং ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি ব্যবহার করে।
৮. যদিও প্ল্যানেট এক্সের অস্তিত্ব নিয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে, কিন্তু নাসার এক আবিষ্কার থেকে জানা গেছে বাস্তবিকই নেপচুন গ্রহের সমান একটি গ্রহ সৌরজগতে রয়েছে যা সূর্যকে একবার প্রদক্ষিণ করতে সময় নেয় ১০ হাজার বছর।
৯. রাতের আকাশে তারার আলো কেন জ্বলতে নিভতে দেখা যায়? মূলত নক্ষত্রের আলো পৃথিবীতে আসার পথে নানা ধরনের গ্যাসের ভেতর দিয়ে চলতে হয়। যে কারণে তারার আলো মিটমিট করে জ্বলতে থাকে।
১০. বিভিন্ন গবেষণা বা যোগাযোগের কাজে পৃথিবীর কক্ষপথে ছাড়া হয়েছে অনেক কৃত্রিম উপগ্রহ। এর মধ্যে গোয়েন্দা তৎপরতা চালানোর জন্যও কৃত্রিম উপগ্রহ ছেড়েছে অনেক দেশ।
১১. প্রতিমাসের একই তারিখে পূর্ণিমা দেখা যায় না কারণ একটি চন্দ্রমাস পূর্ণ হতে সময় নেয় ২৭.৩ দিন।
১২. সৌরজগতের প্রাণ সূর্যের বয়স কিন্তু নেহাতই কম নয়। প্রায় ৪.৬ বিলিয়ন বছর।
১৩. রকেট উৎক্ষেপন বা পৃথিবীতে ফিরে আসা এবং স্পেসস্টেশনের বাইরে কাজ করার সময় নভোচারীরা ডায়াপারের মতো একধরনের পোশাক পড়েন যা সর্বোচ্চ শোষণক্ষমতা সম্পন্ন কাপড় দিয়ে তৈরি করা হয়।
স্পেস স্টেশন। Photo: Public Domain |
১৪. মহাশূন্যে আপনি চিৎকার করলেও কেউ আপনার কথা শুনতে পারবে না। কারণ মহাশূন্যে বাতাস নেই। তবে বেতার তরঙ্গ চলাচলের জন্য বাতাসের প্রয়োজন হয়না। যে কারণে মহাশূন্যে কথা বলতে চাইলে ব্যবহার করতে হবে রেডিও।
১৫. ৭৪ থেকে ৭৯ বছর পরপর পৃথিবীর আকাশে আবির্ভাব ঘটে হ্যালির ধূমকেতুর। ১৯৮৬ সালে শেষবার দেখা গিয়েছিলো এই ধূমকেতু। আবার দেখা যাবে ২০৬১ সালে।
১৬. মহাশূন্য কালো দেখায় কেন। কারণ মহাশূন্যের অন্ধকার অংশের আলো আমাদের চোখ পর্যন্ত পৌঁছায় না বা আলো আসলেও তা পৌঁছাতে হাজার হাজার আলোকবর্ষ সময় লেগে যাবে।
১৭. ছবিতে মহাশূন্য বা মহাবিশ্বের যে অবয়ব বা রং আমরা দেখি বাস্তবে কিন্তু মহাবিশ্বের রং এমন নয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা ইনফ্রারেড বা আল্ট্রাভয়োলেট রশ্মি প্রকৃয়া করে বা রং সম্পাদনা করে দেখানো হয়।
১৮. যদিও বুধ গ্রহ সূর্যের সবচেয়ে কাছে কিন্তু এটি সবচেয়ে উত্তপ্ত গ্রহ নয়। বুধের বায়ুমন্ডল না থাকায় দিনের বেলা তাপমাত্রা ৪২৫ ডিগ্রি সেলিসয়াস পর্যন্ত উঠতে পারে। কিন্তু রাতে তা নেমে যায় হিমাংকের নিচে ১৮০ ডিগ্রি । কিন্তু শুক্র গ্রহের ভারি বায়ুমন্ডলের কারণে তাপ আটকে পড়ে এবং দিন-রাতের সবসময় ৫০০ ডিগ্রি সেলিসয়াস তাপমাত্রা বিরাজ করে।
১৯. একটি নক্ষত্র জন্মানো বা নিঃশেষ হয়ে যাওয়ার সময় ধূলি ও গ্যাস মিলে কসমিক মেঘের সৃষ্টি করে যা নীহারিকা নামে পরিচিত। এই সব নিহারিকা বিভিন্ন বিচিত্র আকারের হয় কিন্তু খালি চোখে এই চোখ ধাঁধানো নিহরীকার সৈন্দর্য দেখা যায় না।
২০. সৌরজগতের সবগুলো গ্রহের মধ্যে শুক্র গ্রহই একমাত্র গ্রহ যা বীপরিত দিকে পাক খাচ্ছে।
বাংলায় দুর্দান্ত সব ভিডিও দেখতে আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন- Funny Frog Creatives
Post a Comment