প্রতিটি শিশুই নানা ধরণের প্রতিভা নিয়ে জন্মায়। শিশু মনে থাকে নানা ধরণের
কল্পনা, ভেসে বেড়ায় নিজস্ব জগতে। পরিবেশ পরিস্থিতি আর চর্চার অভাবে অনেক শিশুর প্রতিভাই
সুন্দরভাবে বিকশিত হতে পারে না। তাই পরিবার, অভিভাবক এদের সবারই দায়িত্ব শিশুর পছন্দের
মূল্যায়ন করে তার প্রতিভা বিকাশে সাহায্য করা।
শিশু বড় হোক আত্মবিশ্বাসের সাথে
প্রতিটি শিশুরই একটি নিজস্ব জগৎ থাকে। সে জেগতে তারাই সব। তাদের কল্পনা
তাদের ইচ্ছামতো কাজ করার স্বাধীনতা সেখানে থাকে। অনেক শিশুকে দেখা যায় যারা নিজেদের
পছন্দের পোশাক, টুপি, মোজা, ফেলনা কোন র্যাপিং পেপার, পুতুল বা খেলনা গাড়ির যন্ত্রাংশসহ
নানা ধরণের জিনিসপত্র সংগ্রহ করে রাখে। ওদের এসব সংগ্রহকে তাচ্ছিল্য না করে বরং উৎসাহ
দিন। ওদের কাছে মূল্যবান এসব জিনিসপত্র রাখার জন্য সুন্দর বাক্স তৈরি করে দিন।দেখবেন
ওরা খুশি হবে, নিজেদের আত্নবিশ্বাস বাড়বে।
যেসব শিশু আঁকতে পছন্দ করে ওদের আঁকাআঁকির জন্য পেন্সিল, রং পেন্সিল, বোর্ডসহ
প্রয়োজনীয় উপকরণ কিনে দিন। প্রতিদিন একবার করে ওকে মনে করিয়ে দিন যে ওর আঁকা সুন্দর
হচ্ছে,পরিবারের সদস্যরা তা পছন্দ করছে। মাঝে মাঝে ওদের আঁকা ছবি অন্যকে উপহার হিসেবে
দিন। এতে শিশুরা বেশ খুশি হয়। আরেকটি কথা, আকা আকির পর অবশ্যই আকার সরঞ্জাম গুছিয়ে
রাখার অভ্যাস গড়ে তুলুন। ওদের বুঝিয়ে বলুন যে, এসব গুছিয়ে না রাখলে প্রয়োজনের সময় ওরা
খুঁজে পাবে না।
অনেক শিশু একা একা কথা বলে, গল্প করে, কবিতা আবৃত্তি করে। মোট কথা একটু
একা হলেই সে নিজের মনের ঝাপি খুলে বসে। অনেক অভিভাবক এটাকে খারাপ মনে করে শিশুদের বকাঝকা
করেন। এটা মোটেই ঠিক নয়, একা একা কথা বলা বা গল্পকে নেতিবাচক ভাবে না দেখে বরং ইতিবাচকভাবে
ওদের সামনে উপস্থাপন করুন। এতে শিশুর গল্প বলা বা গুছিয়ে কথা বলার অভ্যাস তৈরি হবে।
নিজের ব্যক্তিত্বের সঠিক বিকাশ হবে, পাশাপাশি মুখের জড়তাও দূর হবে। তাই শিশুরা কথা
বলার সময় ওদের থামিয়ে না দিয়ে বরং উৎসাহ দিন।
পড়াশুনার পাশাপাশি শিশুদের অবসর কাটানোর তালিকা তৈরি করে দিন। যেমন আজ বিকেলে
সে কি করবে বা কোন গল্পটা পড়বে তা ঠিক করে দিন। যারা গান গাইতে পছন্দ করে তাদের রুটিন
সেভাবে করে দিন। অনেকে পছন্দের কমিক চরিত্রের সাথে মিলিয়ে পোশাক পড়তে পছন্দ করে। তাদের
সেভাবে তৈরি করে পরিবারের সবার সামনে হাজির করাই ভালো।
শিশুকে ছোট খাট জিনিস তৈরি করতে দিন, যেমন কাগজের নৌকা, ফুল, ঘুড়ি, কিংবা
মাটি দিয়ে নানা খেলনা। তাহলে ছোটবেলা থেকেই শিশুর মধ্যে কোন কিছু গড়ার প্রবণতা তৈরি
হবে।
তাহমিনা তাসির