ক্যারিয়ার পরিবর্তন : কখন সিদ্ধান্ত নেবেন?



যদি আপনি ক্যারিয়ার নিয়ে রোমাঞ্চিত না হন, প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে যদি অফিসের কাজের কথা ভেবে আপনার আগ্রহ, উত্তেজনা না থাকে, অথবা যদি মনে হয়, যে কাজ আপনি করছেন, তার অন্তর্নিনিহিত কোনো মূল্য নেই, তাহলে সময় হয়েছে ক্যারিয়ার পরিবর্তন নিয়ে গুরুত্ব দিয়ে ভাবার। জেনে নিন-


ক্যারিয়ার পরিবর্তন : কখন সিদ্ধান্ত নেবেন?

কোনটি আপনার জন্য সঠিক চাকরি?


যে চাকরি আপনার ইতিবাচক, উৎপাদনশীল ও স্বাভাবিক উন্নতি ঘটাবে, আপনার মূল্যবোধ ও সহজাত প্রতিভা বিকাশে সহায়ক হবে, সেই ক্যারিয়ারই সঠিক আপনার জন্য। ঐ ধরণের চাকরি আপনার সাথে মানিয়ে যাবে, সেটি হয়তো চেষ্টার মাধ্যমে খুঁজে নিতে হবে, তবে স্বাভাবিক ও সাবলীল ভাবেই এ ধরণের চাকরি উপভোগ করবেন আাপনি। এ চাকরি আপনার বেশিরভাগ চাহিদা পূরণ করবে, নিজের প্রতি ইতিবাচক ধারণার জন্ম দেবে ও এক ধরণের গর্ববোধও সৃষ্টি করবে।


কখন বুঝবেন আপনি ভুল চাকরিতে আছেন?


নিচের উপলব্ধিগুলো যদি আপনার মাঝে দেখা দেয়, তাহলে চাকরিটা আপনার জন্য সঠিক নয় ভাবতে পারেন। ক্যারিয়ার পরবর্তন নিয়ে গুরুত্ব দিয়ে ভাবুন।

যখন আপনি কোনো কাজ না পেয়ে এ চাকরিটা লুফে নিয়েছেন, এখন অর্থ, পদ সব দিক থেকেই বঞ্চিত হচ্ছেন।

প্রায় প্রতিদিন যদি কাজের টেবিলেই আপনাকে লাঞ্চ সারতে হয়।

আপনার বাবা -মা হয়তো আপনার চাকরি নিয়ে গর্ববোধ করছেন, কিন্তু আপনার ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি অবস্থা।

চাকরিটা আপনার মনে প্রায় সময় অশান্তি তৈরি করছে। আপনার আত্মবিশ্বাস নষ্ট করছে। মূল্যবোধগুলোকে দাবিয়ে রেখে কাজ করতে হচ্ছে। আপনার সততা ভুলে অন্যায়ের সাথে আপোস করতে হচ্ছে।

সাপ্তাহিক ছুটির জন্য যদি তীর্থের কাকের মতো অপেক্ষা করতে হয় আপনাকে।




নিজেকে মূল্যায়ন করুন


আপনার বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করতে নিজেকে মূল্যায়ন করা জরুরী। বর্তমান চাকরিটা আপনি চালিয়ে যাবেন, নাকি এটি ছেড়ে দেবেন, তা বুঝতে নিচের কিছু পরিস্থিতির আলোকে মূল্যায়ন করুন নিজেকে। প্রত্যেক পরিস্থিতির জন্য ‘থাকবো’ অথবা ‘যাবো’ নির্দেশ করা আছে।


প্রতিদিন প্রচুর কাজ করার মানসিকতা নিয়ে আমি অফিসে যাই। (থাকবো)

আমার নিয়োগদাতা আমাকে ন্যায়সঙ্গত ভাবে একজন কর্মচারী হিসেবে সম্মান জানায়। (থাকবো)

সাপ্তাহিক ছুটি বা যে কোনো ছুটির জন্য কাঙ্গাল থাকি আমি। (যাবো)

পেশাগত অবদানের জন্য নিজেকে মূল্যবান ও স্বীকৃত একজন হিসেবে দেখি আমি। (থাকবো)

আমার কাজের পরিবেশ যন্ত্রণাদায়ক মনে হয়। (যাবো)

নিজের মতো কাজ করি আমি, কেউ আমাকে যাচাই করছে কি না তা নিয়ে উদ্বিগ্ন নই আমি। (থাকবো)

কোম্পানির গুরুত্বপূর্ণ প্রজেক্টগুলোতে অন্তর্ভুক্ত আমি। (থাকবো)

অফিসের গুরুত্বপূর্ণ সব সিদ্ধান্তে বা পেশাগত উন্নয়নের ব্যাপারে বস সব সময় আমার সাথে আলোচনা করেন। (থাকবো)

নতুন কাজের দায়িত্ব দেয়া হয় আমাকে। (থাকবো)



কাজের মাধ্যমে মেধা ও সৃজনশীলতায় আরো উদ্দীপ্ত হচ্ছি আমি। (থাকবো)

কাজের মাধ্যমে সমাজের জন্য একটা ইতিবাচক অবদান রাখছি বলে মনে হয় আমার। (থাকবো)

চাকরিটার জন্য আর্থিকভাবে সব ধরনের সুবিধা পাই আমি। (থাকবো)

নতুন আরেকটি চাকরির জন্য দিবা স্বপ্ন দেখি আমি। (যাবো)

আমি মনে করি বর্তমান কাজের মাধ্যমে আমার সত্যিকারের ব্যক্তিসত্ত্বাই প্রকাশ পায়। (থাকবো)

নিজেকে সফল মনে হয় আমার। (থাকবো)

বর্তমান চাকরিটায় নিজেকে জিম্মি ও ভারাক্রান্ত মনে হয়। (যাবো)

ক্যারিয়ারের গতিতে নিজেকে নিয়ন্ত্রিত মনে হয়। (থাকবো)

নিজের সব সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে চাকরি করছি আমি। (থাকবো)

কাজের চাপের কারণে স্ত্রী-সন্তান বা আত্মীয়-স্বজনদের সাথে ভালো সম্পর্ক যাচ্ছে না আমার। (যাবো)

নতুন কাজ বা ভিন্ন কিছু করার ইচ্ছে জাগে আমার। (যাবো)


এখন গুনতে থাকুন ‘থাকবো’ পরিস্থিতি বেশি না কম আপনার জন্য। ‘যাবো’ পরিস্থিতির চেয়ে বেশি হলে বর্তমান চাকরিটাই আপনার জন্য সঠিক আছে ভাবতে পারেন। আর যদি ‘যাবো’ পরিস্থিতি বেশি হয় তাহলে নতুন চাকরির কথা গুরুত্ব দিয়ে ভাবতে হবে আপনাকে।





আহমেদ শরীফ

0/Post a Comment/Comments

Previous Post Next Post