ঘর পরিষ্কার রাখুন, শীতে রোগমুক্ত থাকুন পুরো পরিবার


ঘর পরিষ্কার রাখুন, বিশেষ করে শীতে। বছরের অন্য সময়ের চেয়ে শীতে ঘরবাড়ি একটু বেশি নোংরা হয়। ঘর পরিস্কার রাখার পাশাপাশি জানালা, বারান্দা, রান্নাঘর, বাথরুম সবকিছুই পরিস্কার রাখা জরুরি। কারণ ঘর বা জানালা যতই বন্ধ থাকুক না কেন ধুলো ময়লা ঠিকই ঘরে ঢুকে যায়।



ঘর পরিষ্কার রাখুন, শীতে রোগমুক্ত থাকুন পুরো পরিবার


ঘর পরিষ্কার রাখুন নিয়মিত, এটা এনে দেবে আপনার পুরো পরিবারের সুরক্ষা। আমরা সবাই প্রতিদিন বেডরুম পরিষ্কার করি। তবে, শীতে যেহেতু ধুলো ময়লার প্রকোপ বেশি তাই ঘরেরও বাড়তি যত্ন নেয়া প্রয়োজন। ঘরের আসবাবপত্র পরিস্কারের সময় প্রথমে নরম ও পাতলা কাপড় দিয়ে মুছে নিন। কখনো জোরে ঝাড় দিবেন না, এতে ধুলো ময়লা উড়তে থাকবে। পরিষ্কারের জন্য পাতলা কাপড় ব্যবহার করুন। এসময় ঘরে বেশি ঝুল পড়ে। তাই সপ্তাহে একদিন ঝুল ঝেড়ে ফেলুন। মনে রাখবেন, শীতের সময় সিলিং ফ্যান বা এসি কম ব্যবহার করা হলেও ধুলো ময়লা কিন্তু ঠিকই তাদের জায়গা করে নিয়েছে। তাই এসব জিনিস ব্য্‌বহারের আগে পরিস্কার করে নিন। এসি পরিস্কারের জন্য পেইন্টিং ব্রাশ ব্যবহার করলে কাজ করতে সহজ হবে। ফ্যান পরিস্কারের জন্য লম্বা ঝুল ঝাড়ার ব্রাশ ব্যবহার করতে পারেন।

ফ্যানের পাশাপাশি লাইট, আয়না, ফটোস্ট্যান্ড, ল্যাম্পসেড সবকিছু ভালোভাবে পরিষ্কার করুন। এতে এসব জিনিস ব্যবহার করতে সুবিধা হবে।

বেডরুমে রাখা বই বা ম্যাগাজিন, এসি’র রিমোট, মোবাইল চার্জার পরিষ্কারের পর গুছিয়ে যথাস্থানে রাখুন, এতে দরকারের সময় প্রয়োজনীয় জিনিসটি সহজেই হাতের কাছে পাবেন।



অনেকেই মাসে একবার জানালা পরিষ্কার করেন, এটা মোটেই ঠিক নয়। সপ্তাহে অন্তত দুই থেকে তিন বা জানালা পরিষ্কার করা ভালো। এতে ঘরে ধুলো ময়লার প্রকোপ কম হয়। জানালা পরিষ্কারের সময় অবশ্যই পাতলা কাপড় ব্যবহার করুন। প্রথমে শুকনো পরে ভিঁজিয়ে নিয়ে জানালার প্রতিটি অংশ মুছে নিন। জানালার কাঁচ পরিস্কারের জন্য গ্লাস ক্লিনার বা কুসুম গরম পানিতে সামান্য ডিটারজেন্ট দিয়েও পরিষ্কার করতে পারেন। পরে আবারো শুকনো কাপড় দিয়ে কাঁচ মুছে দিন। না হলে দাগ পড়ে যাবে।

ঘরের হালকা আসবাব প্রতিদিন পরিষ্কার করুন। আর বড় এবং ভারিগুলো একদিন পর পর পরিষ্কার করুন। এতে আপনার সময় ও শ্রম দুই সাশ্রয় হবে। তবে হ্যাঁ, সব কাজ এক সাথে এক সময়ে করবেন না। কাজের সময়টা অবশ্যই ভাগ করে নিন।

ঘরের মেঝে পরিস্কারের সময় প্রথমে ধীরে ধীরে ঝাড়ু দিয়ে নিন। কেননা দ্রুত ঝাড়ু দিলে ধুলো ময়লা পরিস্কার তা হবেই না উল্টো পুরো ঘর চলে যাবে ধুলোর দখলে। তাই সুন্দর করে মেঝে ঝাড়ু দেয়ার পর হালকা গরম পানিতে ফ্লোর ক্লিনিং বা ডিটারজেন্ট দিয়ে মুছে নিন। খেয়াল রাখবেন ঘরের লুকানো জায়গাগুলোও যেন বাদ না পড়ে। ঘর মোছার পর ফ্যান ছেড়ে মেঝে শুকিয়ে নিন। না হলে দাগ পড়ার সম্ভাবনা থাকে।



বেডরুমের সাথে এটাচড বাথরুমের দরজা জানালাও নিয়মিত পরিষ্কার করুন। কেননা জানালা বন্ধ বা খোলা যাই থাকুক না কেন ধুলো ঢুকেই। আর এতে আপনার বাথরুমের দরকারি জিনিসগুলো নোংরা হয়। তাই নিয়ম করে জানালা পরিস্কার করুন। সেই সাথে বেসিন, আয়না, কমোডও।

বসার ঘরের সোফা, চেয়ার, কার্পেট পরিস্কারের জন্য ভ্যাকুয়াম ক্লিনার ব্য্‌বহার করলে কাজ সহজ হয়। না হলে ঝুল ঝাড়ার নরম ব্রাশ ব্যবহার করুন। এতে সোফার কাপড়ের তন্তুও ঠিক থাকবে। রান্নাঘর পরিষ্কারের জন্য অবশ্যই গরম পানি ও ডিটারজেন্ট ব্যবহার করুন। এতে রান্নাঘরের তেলচিটচিটে ভাব থাকবে না। আর সপ্তাহে একদিন কেবিনেট পরিষ্কার করুন। তবে রান্নার চুলা প্রতিদিনই পরিষ্কার করবেন। কেননা, এসময় ধুলো বেশি থাকায় তা রান্নাঘর ও চুলা আরো নোংরা করে।

কাজের চাপে অনেকেই বারান্দা ফেলে রাখেন অযত্নে। কিন্তু এসময় ধুলোবালির সাথে রোগ জীবানু মিশে থাকায় পুরো বাড়িই নিয়মিত পরিষ্কার করা ভালো। দিনে অন্তত একবার বারান্দা ঝাড়ু দিয়ে মপ করুন। তবে বেডরুমের সাথের বারান্দা দিনে দুইবার ঝাড়ু দিন । না হলে বারান্দার ধুলো সুযোগ পেলেই ঢুকে যাবে আপনার ঘরের ভেতর।

অনেকেই শখের বসে বারান্দায় গাছ রাখেন। এসব গাছে পানির দেয়ার পর টব সরিয়ে ভালোভাবে মুছু জায়গামতো গুছিয়ে রাখুন। এতে দেখতে ভালো লাগবে আবার বারান্দা পরিষ্কার থাকবে।

যে কোনো কিছু পরিষ্কারের সময় হ্যান্ড গ্লভস পড়ে নিলে ভালো।



তাহমিনা তাসির


Previous Post Next Post